“শিশুদের বসন্ত কালিন রোগ বালাই ও এর প্রতিকার” ডাঃ তানিয়া আক্তার জাহান (নিপা) নবজাতক শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ
আসসালামু আলাইকুম আমি ডাঃ তানিয়া আক্তার জাহান (নিপা) নবজাতক শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ। আজকে আমাদের অলোচনার বিষয় “শিশুদের বসন্ত কালিন রোগ বালাই ও এর প্রতিকার”। এই বসন্ত শুধু ফুল পাখি আর মানুষকেই দোলা দেয়া না। এই বসন্ত রোগ জীবানুর জন্যও অত্যান্ত গুরুত্ব পূর্ণ একটি ঋতু। এ সময়ে দিনে গরম রাতে ঠাণ্ডা দেখা যায় এবং বাতাসে ধুলি কনার পাশাপাশি বিভিন্ন পরাগরেনুও ভেসে বেড়ায়। শীতের প্রকোপটা কমে যাওয়ার সাথে সাথেই গরম পড়ার সাথে সাথেই দেখা যায় বিভিন্ন ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণুর প্রকোপ বেড়ে যায়। যার ফলে দেখা যায় অনেক রকম শিশুদের রোগ বালাই।
যেমন
ইনফ্লুয়েঞ্জা, ভাইরাস জ্বর ডায়রিয়া, নিউমোনিয়্ ব্রঙ্কিওলাইটিস, হা্ম বসন্ত যেটাকে আমরা চিকেন পক্স বলে থাকি। অ্যালার্জি হাপানী এছাড়াও আরও অনেক কিছু। এখন বিষয়টি হচ্ছে এই ধরনের রোগ সারা বছর জুড়েই থাকে। কিন্তু এই সময়টাতে এর প্রকোপটা বেড়ে যায়। পাশাপাশি ডেঙ্গু ও করনার কোথাও কিন্তু আমরা ভুলব না। এই সমস্ত রোগের সাধারন উপসর্গের মধ্যে দেখা যায় সর্দি, কাশি, জ্বর গলা ব্যাথা, মাথা ব্যাথা পাতলা পায়খানা পেট ব্যাথা এবং দুর্বলতা।
তবে যদি বাচ্চার হাম হয়, তখন দেখা যায় জ্বরের পাশাপাশি চোখ লাল হয়ে যেতে পারে, নিউমোনিয়া হতে পারে এবং শরীরে র্যা শ দেখা যায়। আবার বসন্ত বা চিকেন পক্স হলে দেখা যায় জ্বরের পাশাপাশি বাচ্চার শরীরে ফুস্কুড়ী দেখা দেয় ও চুল্কানীও হয়। আবার যখন বাচ্চার নিউমোনিয়া হয় তখন দেখা যায় সর্দি কাসি জ্বরের পাশাপাশি বাচ্চার অনেক ক্ষেত্রে শ্বাস কষ্টও হতে পারে। ঠিক একই ভাবে হাপানীর ক্ষেত্রেও অনেকের এই প্রকোপ বেড়ে যায় এবং শ্বাস কষ্টও হতে পারে।
এখন এই রোগ গুলো সব গুলোই কম বেশি মারাত্তক এবং হাম বসন্ত খুবই ছোঁয়াচে। তবে ভয়ের কোন কারন নেই সঠিক প্রতিকার করলে সঠিক ভাবে চিকিৎসা করলে এবং ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর যত্ন নিলে সব গুলো রোগ থেকেই রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এ সমস্ত রোগ বালাই থেকে রক্ষা পেতে হলে আমাদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন প্রথমেই যেটা আমাদের করতে হবে বাইরে বের হওয়ার সময় আমাদের মুখে মাস্ক পরতে হবে। ধুলাবালী থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে ও ভিড় বা জনসমাগম থেকে দূরে থাকতে হবে।
এছাড়া শিশুদের পুস্টিকর খাবারের পাশাপাশি মৌসুমি ফল ও সব্জি খাওয়াতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমানে বিশুধ পানি খাওয়াতে হবে। ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খাওয়াতে হবে। জর হলে জরের অসুধের পাশাপাশি স্যালাইন টাও খাওউয়াতে হবে এবং পুস্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। এছাড়া বাচ্চাদের আমরা একটু মুক্ত হাওয়ায় খেলাধুলার সুযোগ করে দিব। শরীরে যেন মাঝে মাঝে যেন হালকা রোদ লাগে সেদিকেও খেয়াল রাখব।
আর পরিবারের যদি কারও বসন্ত হাম বা এই ধরনের ছোঁয়াচে রোগ গুল হয় । তাহলে সবার আগে তাকে আলাদা একটা যত্ন নেওয়ার ব্যাবস্থা করব এবং ডাক্তারে এর সাথে পরামর্শ করে সেই অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহন করব। আমি একটা কথা বলি, প্রিভেনশন ইজ বেটার দেন কিওরিটি। কাজেই আসুন আমরা সতর্ক হই এবং শিশুদের কে বসন্তকালিন রোগ বালাই থেকে রক্ষা করি। ধন্যবাদ সবাই কে আসসালামু আলাইকুম।
ডাঃ তানিয়া আক্তার জাহান (নিপা)
এমবিবিএস, ডিসিএইচ(বিএসএমএমইউ)
নবজাতক শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ
শিশু হৃদরোগ বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত (NICVD)
প্রাক্তন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল