রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

শিশুর খাবারে অরুচি

১১-১২-২০২৩

শিশুর খাবারে অরুচি

শিশুর খাবারে অরুচি বিষয়টি খুবই পরিচিত একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্য সবাই শিশুর রুচির বিষয়ে চিন্তায় থাকেন। প্রায় সব বাবা-মায়েরই অভিযোগ থাকে, শিশু খেতে চায় না। শিশুর রুচি কম হওয়ার পেছনে বিভিন্ন রকম কারণ থাকতে পারে। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি দরকার। এজন্য শিশুর রুচির বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এক্ষেত্রে নানান দিকের নানারকম ভূমিকা থাকে, সেগুলো আলোচনা করা হলোঃ
বাবা-মায়ের ভুমিকা: শিশুকে খাওয়ানোর ব্যাপারে বাবা-মায়ের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। খাওয়ানোর সময় শিশুর সঙ্গে রূঢ় আচরণ করা যাবে না। শিশুর যদি খিদে না থাকে, তবে তাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করা উচিৎ নয়, এতে তার খাবারের প্রতি অরুচি তৈরি হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, জোর করে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টার ফলে খাবারের প্রতি শিশুর মনে ভয় ও অনীহা জন্ম হয়। তাই জোর না করে নিয়মমতো খাবার খাওয়ানোর ব্যাপারে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।

শিশুর সাথে কম সময় দেয়া: শিশুর প্রতি বাবা-মায়ের মনোযোগ কমে গেলে বা কম সময় অতিবাহিত করলেঅ শিশু খাওয়া কমিয়ে দিতে পারে। ব্যস্ততার কারণে হয়তো বাবা-মা অনেক সময় শিশুকে ঠিকমতো সময় দিতে পারে না। শিশুর যত্ন-পরিচর্যায় ঘাটতি হয়। এর ফলে বাচ্চার খাবারে রূচি কমে যায়, শিশুর বিকাশে বিরূপ প্রভাব ফেলে।

মানসিক চাপ: শিশুর যদি রুচি কমে যায়, ঘুম কম হয় এবং সব সময় তাকে বিরক্ত মনে হয়, তবে বুঝতে হবে কোনো কারণে শিশুটি মানসিক চাপে ভুগছে। মানসিক চাপ শিশুর রুচি কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এ সময় শিশুকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। মানসিক চাপ কমিয়ে তাকে হাসিখুশি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণত শিশুরা ভয় পেলে, একাকী থাকলে কিংবা বাবা-মায়ের কাছ থেকে কম সময় পেলে মানসিক চাপে ভোগে।

শারীরিক অসুস্থতা: শারীরিক অসুস্থতার কারণে শিশুর খাওয়ার রুচি কমে যায়। সাধারণত জ্বর, গলা ব্যথা, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, কিংবা ডায়রিয়া হলে শিশুর খাবারের পরিমাণ কমে যায়। সাধারণত সুস্থ হয়ে উঠলেই বেশিরভাগ শিশুর রুচি ঠিক হয়ে যায়। শিশুর শারীরিক অসুস্থতার সময় খাবারের বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। এ সময় শিশুকে অল্প-অল্প করে বারবার খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি দ্রুত সুস্থতার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ মতো চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

কৃমির সংক্রমণ: কৃমির সংক্রমণ শিশুদের শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে। কৃমি শিশুর পরিপাকতন্ত্রে প্রবেশ করে সেখানে পরজীবী হিসেবে অবস্থান করে। এর ফলে শিশুর নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে। রুচিও কমে যায়। কৃমির সংক্রমণ হলে শিশুকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে।

রক্তশূন্যতা: রক্তশূন্যতা রুচি কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। রক্তশূন্যতায় ভোগা শিশুরা অন্য শিশুদের তুলনায় দুর্বল ও ক্লান্ত থাকে। এরা বেশিরভাগ সময়ই বিরক্ত থাকে এবং প্রায়ই কান্নাকাটি করে। সময়মতো রক্তশূন্যতার চিকিৎসা না করালে এসব শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।

এসব কিছুর পাশাপাশি শিশু ঠিকমতো বেড়ে উঠছে কি না সেদিকেও নজর রাখতে হবে। যদি দেখা যায় যে, শিশু সমবয়সীদের মতোই বাড়ছে এবং তার ওজনও ঠিক আছে তাহলে বুঝতে হবে তার শরীরে পুষ্টির কোনো ঘাটতি নেই। অর্থাৎ আপনার শিশুর খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক আছে।

ডা. শাহ মোহাম্মদ ফাহিম
চিকিৎসক, পুষ্টি ও চিকিৎসাসেবা বিভাগ
আন্তর্জাতিক উদরাময় কেন্দ্র, বাংলাদেশ

এই পাতাটি ২০৬বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626