রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

শীতে বাচ্চাদের যে রোগ গুলো সচরাচর হয়ে থাকে ২য় পর্ব - অ্যালার্জিক রাইনাটিস ও ব্রংকিওলাইটিস

০৪-১২-২০২৩

শীতে বাচ্চাদের যে রোগ গুলো সচরাচর হয়ে থাকে ২য় পর্ব - অ্যালার্জিক রাইনাটিস ও ব্রংকিওলাইটিস

শীতকালে সবারই কমবেশি ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বর হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার কারণে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি থাকে। এই বিষয়ে আগের আলোচনায় আমরা সাধারণ ঠাণ্ডা ও ঠাণ্ডার এলার্জি নিয়ে কথা বলেছিলাম। এই পর্বে আলোচনা করা হবে অ্যালার্জিক রাইনাটিস ও ব্রংকিওলাইটিস নিয়ে -

অ্যালার্জিক রাইনাটিস
শিশু বয়সে তো বটেই, বড়দের মধ্যেও এই সমস্যা বেশ প্রকট। অ্যালার্জিক রাইনাটিসে আক্রান্ত শিশুদের প্রায় ৩০ শতাংশ পরবর্তীকালে অ্যাজমাতে আক্রান্ত হয়। এটা একটা মৌসুমি রোগ। অ্যালার্জিক রাইনাটিসে আক্রান্তদের সাথে কোল্ড অ্যালার্জি বা শীতকালীন সংবেদনশীলতার খুব বড় পার্থক্য করা সম্ভব হয় না। তবে অ্যালার্জিক রাইনাটিসের লক্ষণ শীতকাল ছাড়াও বসন্ত, গ্রীষ্মকাল ও শরতকালের প্রথম দিকে হতে পারে। যদি হঠাৎ এই সমস্যা হয় বা প্রতিবছর একই সময়ে এমন সর্দি হয়, তাহলে মৌসুমি অ্যালার্জি থাকতে পারে। সর্দি ও মৌসুমি অ্যালার্জির লক্ষণ একই হলেও এগুলো রোগ হিসেবে একে অপরের থেকে আলাদা।
এ রোগে সাধারণত নাক চুলকানো ও সর্দি, চোখ, মুখ বা ত্বকের চুলকানি, হাঁচি, নাক বন্ধ (ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে) ও ক্লান্তি বা অবসাদ বোধ হয়। অ্যালার্জির কারণে কনজানটিভাইটিস, গলা ব্যথা, সাইনোসাইটিস, অ্যাজমা, অ্যাকজিমা, কান পাকা অসুখ ও গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। এসব রোগীর দুই নাসারন্ধ্রের মধ্যবর্তী প্রাচীর অনেক ক্ষেত্রেই বাঁকা থাকে, নাকে পলিপ বা নাকের সম্মুখভাগের ওপর সমান্তরাল খাঁজ থাকে। শিশুরা অনবরত হাতের তালু দিয়ে নাক ঘষতে থাকে এবং সারাক্ষণ নাক-মুখ কুঁচকায়, চোখের পাতার নিচে নীলচে কালো রঙের ছোপ দাগ দেখা দেয়।
এই রোগ প্রতিরোধে ধুলাবালি, পশু-পাখি, তেলাপোকা, ঠাণ্ডা বাতাস, সিগারেটের ধোঁয়া ইত্যাদি থেকে দূরে থাকতে হবে। কারো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিহিস্টামিন (সিট্রিজিন, ফেক্সোফিনাডিন), ইন্ট্রা-ন্যাজেল স্টেরয়েডস (বাডিসোনাইডস, ফ্লুকর্টিসোন প্রোপাইয়োনেটস), অ্যান্টি-লিউকেট্রিনস (মনিটিলুকাস) ইত্যাদি প্রয়োগ করা যেতে পারে।

ব্রংকিওলাইটিস
ব্রংকিওলাইটিস শীতকালে বেশি হয়। এই রোগে শিশুরা শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশির মতো সমস্যায় বেশি ভোগে। সাধারণত দুই মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত শিশুদের ক্ষেত্রে এ রোগ হয়। তবে তিন থেকে ৯ মাসের শিশুদের বেশি হয়। ‘রেসপিরেটরি সিনথেটিয়াল’ নামের একটি ভাইরাস ছাড়াও রাইনো ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণে এই রোগ হতে পারে।
এই রোগ হলে প্রথমে আক্রান্ত শিশুর নাক দিয়ে পানি পড়ে। এরপর আস্তে আস্তে কাশি শুরু হয় এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তখন শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের খাঁচা বা পাঁজর দেবে যায় বা ভিতর দিকে ঢুকে যাওয়ার মতো বসে যায় এবং শিশু ঘন ঘন বা দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে। শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে সাঁই সাঁই শব্দ বা বাঁশির আওয়াজের মতো শোনা যায়। দুধ টানতে বা খেতে শিশুর কষ্ট হয়। তবে শিশুটি ঠাণ্ডা-কাশি আর অল্প শ্বাসকষ্টে ভুগলেও সেই অর্থে অসুস্থ মনে হয় না। এতে আক্রান্ত শিশুর সাধারণত তেমন জ্বর থাকে না, হলেও তাপমাত্রা কম থাকে।

সাধারণ চিকিৎসা
- নাক-গলা পরিষ্কার রাখুন (বাল্ব সাকার বাল্ব সিরিঞ্জ ব্যবহার করতে পারেন)।
- জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল ওষুধ খাওয়ান।
- পর্যাপ্ত পানি ও খাদ্য খাওয়ান।
- শ্বাসকষ্টের জন্য নেবুলাইজার (ইপ্রাটোপিয়াম, সালবিউটালিন) অথবা ব্রংকোডাইলেটর সিরাপ (ব্রডিল বা সালমলিন সিরাপ) দেওয়া যেতে পারে।

তবে মনে রাখতে হবে ব্রংকিওলাইটিস রোগে অ্যন্টিবায়োটিকের কোনো প্রয়োজন নেই। এই রোগ প্রতিরোধে শিশুকে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। স্যাঁতসেঁতে, অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে রাখা যাবে না। উষ্ণ আবহাওয়ায় স্বাভাবিক আলো-বাতাস চলাচল করে এমন ঘরে রাখতে হবে। শীতের তীব্রতা অনুযায়ী হালকা ও নরম কাপড় পরিধান করাতে হবে। ধুলাবালি, ধোঁয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে, বড়দের শিশুর ঘরে বা সামনে ধূমপান করা যাবে না।

এই পাতাটি ২১৬বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626