রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

গরমে শিশুর যত্ন। ডা: আলম ইফতেখার বেলায়েত, নবজাতক শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ

২৫-০৫-২০২৩

গরমে শিশুর যত্ন। ডা: আলম ইফতেখার বেলায়েত, নবজাতক শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ

আসসালামু আলাইকুম, আমি ডা: আলম ইফতেখার বেলায়েত, নবজাতক শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

আমি আপানাদের সামনে একটা টপিক নিয়ে আলোচনা করব। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই টপিক টি খুবই গুরুত্ব পূর্ণ এবং তথ্য বহুল। আজকে আমার বকতব্যের মুল টপিক হচ্ছে গরমে শিশুর যত্ন। এখন অনেক গরম পড়েছে এবং এখন এই গরমে শিশুদের অনেক অসুখ বিশুখ হচ্ছে। আমাদের উত্তর বঙ্গের আবহাওয়া কে এক্সট্রিম ওয়েদার বলে। শীতকালে অনেক শীত গরম কালে অনেক গরম পড়ে। এতে করে আমাদের শিশুরা অনেক ধরনে সমস্যার সন্মুখিন হয়। আমরা বড়রা কোন সমস্যা হলে বলে জানাতে পারি। কিন্তু শিশুরা এসব কিছু করতে পারে না। এর ফলে অনেক ধরনের সমস্যার সৃস্ট হয়। তাই এই সময়ে বাচ্চাদের আভিভাবকরা কি করবেন আমি আপনাদের কিছু পরামর্শ দিব।

বাচ্চাদের আভিভাবক রা প্রায়ই একটা প্রশ্ন করে থাকেন। যে বাচ্চাদের প্রতিদিন গোছোল দেয়া যাবে কি না। আমি বলব হ্যা আপনারা বাচ্চাদের প্রতিদিন গছল দেয়াবেন। তবে খেয়াল রাখবেন জেন গোছলের পানিটা যেন নরমান পানি হয়। অথবা চেস্টা করতে হবে জেন বাচ্চার গোছলের পানি টা যেন হাল্কা গরম হয়। যেটাকে আমরা কুসুম পানই বলে থাকি। এবং বাচ্চার শরির ভালো ভাবে পরিস্কার করে দিবেন। বিশেষ করে বাচ্চার শরিরের ভাজ গুলো ভালো ভাবে পরিস্কার করে দিতে হবে। কারন এ সমস্ত যায়গায় ঘাম জমে ফুস্কুড়ি বা র্যা স হতে পারে। ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে। এই প্রচন্ড গরমে আপনারা বাচ্চাদের ডায়াপার পরানো থেকে বিরত থাকবেন। কেননা গরমে ডায়াপার ব্যবহার করলে ফাঙ্গাল ইনফেকশন বা ডায়াপার র্যা শ হতে পারে।

এই গরমে বাচ্চাদের খাবার দাবার এর ব্যাপারে খুবই যত্নশীল হবেন। বাচ্চাদের বাসি খাবার একেবারেই দিবেন না। বর্তমানে শহরে টাইফয়েড ও জন্ডিস অনেক গুন বেড়ে গেছে। আমরা অনেক টাইফয়েড ও জন্ডিস এর রুগি পাচ্ছি। এজন্যে বাচ্চার অভিভাবকদের খাবারের ব্যাপারে অনেক সচেতন থাকতে হবে। তাই গরমের সময় বাচ্চাদের খাবারের ব্যাপারে সচেতন থাকার বিকল্প নাই। আর বাচ্চাকে সহজ পাচ্চ্য খাবার দেয়ার চেস্টা করবেন।

গরমে বাচ্চাদের জন্যে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন বাসস্থান খুবই জরুরী। আমাদের স্যাতস্যেতে পরিবেশ পরিহার করতে হবে। স্যাতস্যেতে পরিবেশ রোগ বাইলাই এর উৎস। তাই আমাদের স্যাতস্যেতে পরিবেশ পরিহার করতে হবে। যে সকল ঘরে বা বাড়ীতে বেশি আলো ও বাতাস চলাচল করে এমন যায়গায় বাচ্চাকে রাখতে হবে। বাচ্চার পরিবেশের দিকে আমাদের যত্নশীল হতে হবে। বন্ধ ঘরে বাচ্চাকে রাখা যাবে না। বাচ্চার ঘরে সাধারনত ২৬ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রাখতে হবে। এবং ঘরে আলো ও বাতাস চলাচল করে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বাচ্চা কে এই গরমে পাতলা বা সুতি কাপোড় পরাতে হবে। আর বর্তমানে বাচ্চাদের ডায়রিয়ার পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। বাচ্চার ডায়রিয়া দেখা দিলে সাথে সাথে বাচ্চাকে খাবার স্যালাইন ও তরল খাবার ঘন ঘন খাওয়াতে হবে। প্রতিবার পাতলা পায়খানা হয়ার পরেই খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। আর একটা কথা খেয়াল রাখতে হবে, খাবার স্যালাইনের কোন বিকল্প নাই। সেই সাথে নজর রাখতে হবে যে বাচ্চার চোখ বসে গেছে কি না। চামড়া শুকিয়ে গেছে কি না। বাচ্চার পেশাব কেমন বা কয় বার হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে পানি সল্পতার লক্ষন। বাচ্চার পানি সল্পতার লক্ষন দেখা দিলে অভিভাবোকদের উচিৎ তৎক্ষণাৎ শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সরাপন্ন হওয়া।

সব ধরনের সব বয়সের বাচ্চাদের আসলে যত্ন নেয়ে উচিৎ তবে শূন্য থেকে ৬ মাস বয়সী বাচ্চাদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। এই গরম পরিবেশে তাদের পানি সল্পতা দেখা দিলে বাচ্চার স্বাস্থ্যের মারাত্তক ক্ষতি হতে পারে। এমন কি তাদের জীবন বিপন্ন হতে পারে। এদিকে আমাদের সব সময় খেয়াল রাখা উচিৎ। তাই শূন্য ০ থেকে ৬ মাস বয়সী বাচ্চাদের দিকে বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখা উচিৎ। এর পাশাপাশি বাচ্চাকে ঘন ঘন মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। বাচ্চা পানি শুন্যতায় ভুগছে কিনা। বা গরমে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আর এটা জানার জন্যে দেখতে হবে বাচ্চার পেশেব হচ্ছে কি না। দিনে ৬ থেকে ৭ বার আর রাতে ১ থেকে ২ বার পেশাব হচ্ছে কিনা তা খেয়াল রাখতে হবে। যদি পেশাবের পরিমান কমে যায় তাহলে বুঝতে হবে বাচ্চা পানি শুন্যতায় ভুগছে। এর পাশাপাশি আর একটা বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে যে। বাচ্চার চামড়া শুকিয়ে যাচ্ছে কি না। শূন্য ০ থেকে ৬ মাস বয়সী বাচ্চাদের এটা একটা বিশেষ বিপদ চিহ্ন।

তাই বাচ্চাকে সুস্থ্য রাখতে ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়াবেন। পাশাপাশি। বাচ্চার মায়ের জেন বুকের দুধের ঘাটতি না হয়ে। সে জন্যে বাচ্চার মা কে বেশি বেশি সব্জি সাথে পানি খেতে হবে। একটি বাচ্চা পানি শুন্যতায় চলে গেলে বাচ্চার জীবন ঝুকির মধ্যে পড়ে যায়। পাশাপাশি যদি বাচ্চার গায়ে ঘাম বশে যায়। তাহলে তা থেকে সরদি কাশি হতে পারে। এবং তা থেকে নিউমোনিয়া ও হয়ে যেতে পারে। এজন্যে প্রতিটা মা বাবার উচিৎ বাচ্চাদের প্রতি বিশেষ করে শূন্য ০ থেকে ৬ মাস বয়সী বাচ্চাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়া। পরিশেষে বলতে চাই, সন্তান আপনার তাকে যত্ন নেয়ের দায়িত্ব আমার আপনার সকলের। আসুন আমরা সকলে মিলে শিশুর সুস্বাস্থ্য রক্ষায় একান্ত ভাবে সুন্দর একটা আগামি গড়ে তুলতে চাই। সকলে ভালো থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।



এই পাতাটি ৩৬২বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626