প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন কার্যকরী ও সফল, এমন সংবাদ শোনা যাচ্ছে।
আসলেই এই সংবাদ কি সত্য? ভ্যাকসিন তাহলে কবে পাব? দাম কত হবে?
একটি ভিডিও বার্তায় এই বিষয়গুলো নিয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য তুলে ধরেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি চিকিৎসক ডা. তাসনিম জারা। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এভিডেন্স বেজড মেডিসিন’ নিয়ে পড়ছেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাজ্যে করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন সামনের সারিতে থাকেন।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নিয়ে তাসনিম জারা বলেন, ‘অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন যে সফল হয়েছে এমন দাবি যেসব বিশেষজ্ঞ এটি তৈরি করছেন তারাও দাবি করেননি। কারণ এই ভ্যাকসিনটি যে করোনা থেকে আমাদের বাঁচাতে পারবে সেটি এখনও নিশ্চিত নয়। বরং তা জানতে ট্রায়াল বা গবেষণা এখনও চলছে। ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হচ্ছে।’
তাহলে সফল কীভাবে হল? কোনও সুখবরই কি নেই?
এ বিষয়ে তাসনিম জারা বলেন, ‘হ্যাঁ, সুখবর আছে। খুব বড় একটা সুখবরই পাওয়া গেছে। ভ্যাকসিনটি সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে। আশাবাদী হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে একটি ভ্যাকসিন সফল কি না তা জানতে আমাদের কয়েকটি ধাপ পার করতে হয়।
ধাপগুলো কী কী? গল্পের মতো করে তা সহজভাবে তুলে ধরেছেন ডা. তাসনিম জারা।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে একটি ক্যানডিডেট ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়। অর্থাৎ এটি ভ্যাকসিন পদপ্রার্থী। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই এটি ভ্যাকসিন হবে। থিওরি অনুযায়ী এই ক্যানডিডেট ভ্যাকসিন কাজ করার কথা। কিন্তু থিওরিতে কাজ করলে সেটি বাস্তবে কাজ নাও করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষকে সরাসরি ভ্যাকসিন দিলে যদি ক্ষতি হয়ে যায়, সেই দুর্ঘটনা এড়াতে ভাকসিনটি প্রথমে দেওয়া হয় ল্যাবে থাকা প্রাণী যেমন- খরগোশ বা বানরের শরীরে। গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় ওই প্রাণীর স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হচ্ছে কি না। বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের যে ভ্যাকসিনের কথা কিছু দিন আগে শোনা গিয়েছিল, সেখানে তারা দাবি করেছে যে এই পর্যায় পর্যন্ত অর্থাৎ প্রাণীর শরীরে ভ্যাকসিনটি সফল হয়েছে।’
তাসনিম জারা বলেন, ‘এই ধাপটি পার হলে তারপর মানবদেহে প্রয়োগ করার অনুমতি চাওয়া হয়। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাইয়ের পর অনুমতি পেলে সাধারণত তিন পর্যায়ে বিভিন্ন সাবধানতা অবলম্বনের মাধ্যমে দেখা হয় ভ্যাকসিনটি মানবদেহের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর কি না। এই ক্ষেত্রে নিরাপদ ও কার্যকর আবশ্যকীয় দুটি শর্ত। এর ব্যতয় সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে অক্সফোর্ডে ভ্যাকসিনটি মানবদেহে নিরাপদ। কার্যকারিতা নিয়ে আশার আলো দেখা গেছে। তবে কিছু প্রশ্ন রয়ে গেছে।’
প্রশ্নগুলোর ব্যাখ্যায় ডা. তাসনিম জারা বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটি মানবদেহে দুই প্রকারের শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। তবে এই শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা করোনা ঠেকাতে কি পরিমাণে কয়বার ভ্যাকসিন দিলে কার্যকর হবে বা আদৌ কার্যকর হবে কি না তা জানা দরকার। আর এটি জানার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা গবেষণা করছেন। যদিও প্রবল সম্ভাবনা আছে ভ্যাকসিনটি সফল হওয়ার তবে সেটি নাও হতে পারে বলে সাবধান করছেন খোদ অক্সফোর্ডের গবেষকরাই।’
ভ্যাকসিন কবে পাব?
এ বিষয়ে ডা. তাসনিম জারা বলেন, বিষয়টি কারও পক্ষেই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। অক্সফোর্ডের গ্রুপের প্রধানকে আজকেই জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এই বিষয়ে তিনি বলেছেন এটি বলা সম্ভব নয়। তাই কোনও সংবাদে যদি সময় বলা হয় যেমন- সেপ্টেম্বর, অক্টোবর সেটিকে পূর্বানুমান হিসেবেই দেখবেন।
ভ্যাকসিনের দাম কত হতে পারে?
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত এপ্রিল মাসে “অ্যাসট্রাজেনেকা” নামে একটি কোম্পানির সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে অক্সফোর্ড। তারা একমত হয়েছে যে এই মহামারী চলাকালে ভ্যাকসিনটি কোনও লাভ ছাড়াই শুধুমাত্র উৎপাদন খরচে বাজারজাত করা হবে।’
বাংলাদেশ কি পাবে এই ভ্যাকসিন?
এ বিষয়ে ডা. তাসনিম যারা বলেন, ‘ভ্যাকসিনটি উৎপাদন অনেক আগেই শুরু হয়েছে। এখনও চলছে। জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে জানানো হয়েছিল যে ২ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন তৈরি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে এক মিলিয়ন ডোজ বিশ্বের নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলো পাবে। যা উৎপাদন হবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে। আমাদের দেশ কখন পাবে কিংবা এই ভ্যাকসিনের পাওয়ার দৌঁড়ে কতটা এগিয়ে থাকবে তা আমাদের সরকারই ভাল বলতে পারবে।’ বাংলাদেশ প্রতিদিন।
রাজডক কী? ফ্রী সদস্য হোন
Click Here
ডাক্তার হিসাবে যোগদান করতে Click Here স্বাস্থসেবা সংক্রান্ত তথ্য পেতে কল করুন 01753226626 নম্বরে (সকাল ১০টা থেকে রাত ৬টা)
রাজডক কী? ফ্রী সদস্য হোন
Click Here
ডাক্তার হিসাবে যোগদান করতে Click Here স্বাস্থসেবা সংক্রান্ত তথ্য পেতে কল করুন 01753226626, 01311336757 নম্বরে (সকাল ১০টা থেকে রাত ৬টা)