রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

দ্রুত চিকিৎসা হলে শিশুদের অটিজম ম্যানেজ করা সহজ

২৭-০৪-২০২০

দ্রুত চিকিৎসা হলে শিশুদের অটিজম ম্যানেজ করা সহজ

অটিজম আক্রান্ত শিশুদের অভিভাবকদের প্রতি বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন সাইকোলজিস্টরা। এ নিয়ে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের দুইজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ফাহিয়া রহমান এবং মেরিন সুলতানার সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের। সাক্ষাৎকারের পুরোটা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

ফাহিয়া রহমান : আসসালামু আলাইকুম। আমি ফাহিয়া রহমান। অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট।


মেরিন সুলতানা : আমি মেরিন সুলতানা। অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট। আমরা দুজনই ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে আছি। ফাহিয়া সকালের শিফটে আছে। সকাল আটটা থেকে চারটা। আমি বিকেলের শিফটে আছি। দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।

ফাহিয়া রহমান : আমরা সবাই জানি এপ্রিলের ২ তারিখ ওয়ার্ল্ড অটিজম অ্যাওয়ারনেস ডে পালন করা হয়ে থাকে। আমাদের ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল খুবই গুরুত্ব সহকারে এ দিবসটি পালন করে থাকে। এই হসপিটালে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট যেমন অটিজম ক্লিনিক, ফিজিওথেরাপি, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি, নিউট্রিশন ডিপার্টমেন্টে টিমওয়ার্ক হিসেবে কাজ করে থাকি।


মেরিন সুলতানা : অটিজম নিয়ে আমরা সবাই কমবেশি জানি। এরপরও বলি যে, এটি কোনো মানসিক বা বংশগত রোগ নয়। এটি হচ্ছে একটি স্নায়ুগত বা নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজ-অর্ডার। সাধারণত বাচ্চার তিন বছর বয়সের পর থেকেই অটিজমের লক্ষণগুলো প্রকাশ হতে থাকে। এ রোগের কারণে বাচ্চার মধ্যে কিছু মনোসামাজিক ও আচরণগত সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। এর সচেতনতার প্রথম ধাপ হচ্ছে যে, আমরা সচেতনতা বলতে বুঝি যে, প্রতি বছর ২ এপ্রিল ওয়ার্ল্ড অটিজম অ্যাওয়ারনেস ডে পালন করা হয়।

সে জায়গা থেকে সচেতনতা বলতে আমরা প্রথমেই বলে রাখি যে, প্রথমেই আমরা রোগের লক্ষণগুলো সম্পর্কে যেন খুব ভালোভাবে জেনে থাকি। প্রথম সচেতনতা সেখান থেকেই শুরু হয়। আমরা যেন রোগের লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকি। বাবা-মাকে বুঝাতে পারি। তাহলে যদি তারা খুব তাড়াতাড়ি সে লক্ষণগুলো ধরতে পারে, তাহলে আর্লি ডায়োগনসিস্ট সম্ভব হয়। দ্রুত চিকিৎসা হলে এই রোগটিকে ম্যানেজ করা অনেক ক্ষেত্রেই সহজ হয়ে থাকে।


ফাহিয়া রহমান : প্রথমে আমরা জেনে নেই অটিজমের লক্ষণগুলো কী কী। প্রথম লক্ষণ হলো দেরিতে কথা বলা। কারও চোখের দিকে না তাকানো বা অনেকবার প্রশ্ন করার পর সাড়া দেয়া কিংবা ডাকলেও সাড়া না দেয়া। সামাজিক কোনো জায়গায় মেলামেশা না করা। একই কাজ বারবার করা কিংবা একই খেলা খেলতে থাকা। এছাড়া কিছু অ্যাবনরমাল বিহেভিয়ার সাইন আছে। যেমন অকারণে হাসি। অযথা কিছু অঙ্গসঞ্চালন। যেমন হাত ঘুরানো বা লাফানো কিংবা অকারণে অবসাদে ভোগা। এ ধরনের কিছু সিম্পটম আমরা দেখে থাকি। এছাড়া ডায়াগনসিস্ট আরও কনফার্ম করার জন্য আমরা কিছু সাইকোমেট্রিক টুলস বা আইকিউ টেস্ট করে থাকি।

মেরিন সুলতানা : এখন আমরা বলব এর ম্যানেজমেন্ট কী বা আমরা কীভাবে এ রোগটাকে ম্যানেজ করব। ম্যানেজমেন্টের শুরুতেই আমরা বলে রাখি যে, অটিজমের যেহেতু নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই বা যেমন এর নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। সচেতনতাই পারে এ বিষয়টাকে ম্যানেজ করে রাখতে। যেহেতু এটা একটা লাইফ লং প্রসেস, সেক্ষেত্রে প্রথমেই আমরা কাজ করে থাকি পিতা-মাতার সাথে (প্যারেন্টস) সাথে। প্যারেন্টলি কাউন্সেলিংটাই ফোকাস একটা এরিয়া। পিতা-মাতাকে যদি আমরা সচেতন করতে পারি, তাহলে তারা যেহেতু লাইফ লং বাচ্চাদের সাথে ডিল করে থাকে। এ যাত্রাটা কিছুটা হলেও তাদের জন্য সহজ হয়ে থাকে।

প্যারেন্টাল কাউন্সেলিংয়ের শুরুতেই যেটি আমরা করে থাকি, সেটি হলো অটিজম কী- এ রোগটি সম্পর্কে তাদের বিস্তারিত জানানো। অর্থাৎ পিতা-মাতাকে সাইকো এডুকেট করা। যেমন এ রোগের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে তারা এ লক্ষণটাকে কীভাবে ম্যানেজ করবে। সে জিনিষগুলো তাদের আগে জানানো হয়। এছাড়া অটিজমে শিশুদের দীর্ঘদিন ডিল করার কারণে পিতা-মাতার মধ্যেও কিছু হতাশা বা উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। আমরা কাউন্সেলিং সেশনে সেই এনজইটি বা ডিপ্রেশন লেভেলটাকে নিয়েও কাজ করে থাকি। এছাড়া যেই জায়গাটাকে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি সেটা হচ্ছে অ্যাসেপটেন্স এরিয়াটা নিয়ে যে, বাচ্চাটা অটিজমে আক্রান্ত বা তার যে এই লাইফ লং একটা ডিজ-অ্যাবিলিটি, সেই জায়গায় যদি বাবা-মা শুরুতেই যদি মেনে নিতে না পারে তাহলে সে যাত্রাটা স্মুথ হয় না। এ সেশনে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করি যে, বাবা-মা যেন বিষয়টি মেনে নিতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি যদি এই বিষয়টিকে যদি অ্যাসেপ্ট করে নিতে পারি তাহলে সেই বাচ্চাকে বেটার সার্ভিস দেয়া বাবা-মার পক্ষে সম্ভব হবে।

আর বাচ্চাদের নিয়ে আমরা সাধারণ কাজ করে থাকি, তার বিহেভিয়ার লেভেল কিছু কিছু ক্ষেত্রে গড়ানো, সবক্ষেত্রে যদিও এটি সম্ভব হয় না। তার কমিউনিকেশন লেভেল যেমন ভারবাল বা নন-ভারবাল এই এরিয়াগুলোতে ইম্প্রুভ করানো যায় কিনা। তার ইমোশনাল রেগুলেশনটা ঠিকমতো হচ্ছে কিনা। বাবা-মার সঙ্গে কোন জায়গায় সে ইমোশনাল রেগুলেশন করছে। যে জায়গা রেগুলেট হচ্ছে সে জায়গাটা ধরতে পারছে কিনা। সে জায়গাগুলোকে নিয়ে কাজ করা।

মেইনলি আমি শেষে এটাই বলব, যে এটা ম্যানেজম্যান্ট বলতে, কিছু কিছু কাজ করলে সব জায়গা ঠিক হয়ে যায় তা না, কিন্তু এটাকে যদি আমি মেনে নিতে পারি। এটাকে নিয়ে সারাজীবন চলার একটা প্রত্যয় থাকে তাহলে এ নিয়ে ভালোভাবে কাজ করা যায়।

শেষে এটাই বলতে চাই অটিজম ইজ এ ডিফারেন্ট, নট এ ডিজ-অ্যাবিলিটি। আমরা যদি এ জায়গাটাকে মেনে নেই, তাহলে তাদের যাত্রাপথটা আরও সুদীর্ঘ হয়।

ফাহিয়া রহমান : সর্বোপরি যদি আমরা এ রোগটাকে বোঝার চেষ্টা করি, তখন তাদের প্রতি সহযোগিতা, সহমর্মিতা ও ভালোবাসা হাতটা আমরা এগিয়ে দিতে পারব। ধন্যবাদ।


এই পাতাটি ৯২৩বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626