রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

ভিটামিন এ নিয়ে যত কথা…

২৩-০১-২০২৪

ভিটামিন এ নিয়ে যত কথা…

ভিটামিন ‘এ’ হল চর্বিতে দ্রবনীয় ভিটামিন এবং প্রাণীদের জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন ‘এ’ র রাসায়নিক নাম ‘রেটিনাল’। মানবদেহে ভিটামিন ‘এ’ জারিত হয়ে রেটিনোয়িক অ্যাসিড তৈরি করে। ভিটামিন ‘এ’ খাদ্যের একটি খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান।

ভিটামিন ‘এ’ র উৎস
ভিটামিন ‘এ’ মূলত ক্যারোটিন থেকে তৈরি হয়। ভিটামিন ‘এ’ তৈরির উৎস দুটি-
১.উদ্ভিদজাত ২. প্রাণীজাত

ভিটামিন এ যৌগগুলি প্রাণী এবং উদ্ভিদ উভয় খাবারেই পাওয়া যায় এবং দুটি ভিন্ন রূপে আসে: প্রিফর্মড ভিটামিন এ এবং প্রোভিটামিন এ।

প্রিফর্মড ভিটামিন এ ভিটামিনের সক্রিয় ফর্ম হিসাবে পরিচিত, যা আপনার শরীর যেমন ব্যবহার করতে পারে। এটি মাংস, মুরগি, মাছ এবং দুগ্ধ সহ প্রাণীজ পণ্যগুলিতে পাওয়া যায় এবং এতে রেটিনল, রেটিনাল এবং রেটিনোইক অ্যাসিড রয়েছে।

প্রোভিটামিন এ ক্যারোটিনয়েড - আলফা-ক্যারোটিন, বিটা-ক্যারোটিন এবং বিটা-ক্রিপ্টোক্সানথিন - উদ্ভিদে পাওয়া ভিটামিনের নিষ্ক্রিয় রূপ। এই যৌগগুলি আপনার শরীরে সক্রিয় ফর্মে রূপান্তরিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, বিটা-ক্যারোটিন আপনার ছোট অন্ত্রে রেটিনল (ভিটামিন এ-এর একটি সক্রিয় রূপ) রূপান্তরিত হয় |

উদ্ভিদজাত উৎস হল হলুদ ও সবুজ শাকসবজি, রঙিন ফলমূল, সাধারণত যে শাকসবজি বা ফলের রঙ যত গাঢ় হয় তাতে ভিটামিন ‘এ’ র পরিমান তত বেশি হয়। এছাড়া গাজর, কুমড়ো, পাকা পেঁপে, ঘি, মাখন ও অন্যান্য সব্জি, ফল ইত্যাদিতে ভিটামিন ‘এ’ থাকে। প্রাণীজাত উৎস হল মূলত মাংসাশী প্রাণী (হাঙর, কড, হ্যলিবাট ইত্যাদি মাছের যকৃৎ)। মাছের তেল বা তেলযুক্ত মাছ। মাংস, ডিম ইত্যাদি খাবার থেকে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়।

ভিটামিন ‘এ’ র পরিমান
শরীরে ভিটামিন ‘এ’ প্রয়োজন অনুযায়ী থাকা দরকার। একজন পূর্ণবয়স্ক মহিলার শরীরে ভিটামিন ‘এ’ দিনে কম করে ৭০০ মাইক্রোগ্রাম থাকা উচিত। পূর্ণবয়স্ক পুরুষদের শরীরে দিনে কম করে ৯০০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘এ’ থাকা দরকার। মহিলাদের খাবারে ঊর্ধ্বসীমা দৈনিক সর্বাধিক ৩০০০ মাইক্রোগ্রাম ও পুরুষদেরও ৩০০০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘এ’ থাকা দরকার।

ভিটামিন ‘এ’ র কাজ
ভিটামিন ‘এ’ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন ‘এ’ চোখের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। শরীরের বিকাশে ভিটামিন ‘এ’ র ভূমিকা আছে। বাহ্যিক আবরণের কোষ, ত্বক, দাঁত, ও অস্থির গঠনের জন্য ভিটামিন ‘এ’ জরুরী। ভিটামিন ‘এ’ নানা রকমের সংক্রামক রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করে থাকে। শরীরে প্রাপ্ত লৌহের স্বাভাবিক ব্যবহারের ঘাটতি হয় না ভিটামিন ‘এ’ শরীরে থাকলে। ফলে রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয়না। শরীর সুস্থ্য থাকে। ভিটামিন ‘এ’ বার্ধক্য রোধ করতে সহায়ক। ত্বকের শুষ্কতা বা বলিরেখা ভিটামিন ‘এ’ র দ্বারা থাকে না। ত্বক সতেজ রাখে। টিউমার ও ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে ভিটামিন ‘এ’। লিভার ভালো রাখে। ভিটামিন আমাদের নাকের শ্লেষাঝিল্লিকেও সুস্থ রাখে।

ভিটামিন ‘এ’ ও শিশু
শিশুর পুষ্টির ক্ষেত্রে ভিটামিন ‘এ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শিশুদের শরীরে ভিটামিন ‘এ’ র অভাব থাকলে শিশুর পুষ্টিতে ব্যঘাত ঘটে। পৃথিবীতে এখনও প্রতিবছর ৬০০০০০ শিশু ভিটামিন ‘এ’ র অভাবে অপুষ্টির শিকার। ৯ মাস থেকে ৪ বছরের শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ জনিত রোগ বেশি দেখা যায়। ভিটামিন ‘এ’ র অভাবে ক্যারটম্যালেসিয়া রোগ দেখা দেয়। ভিটামিন ‘এ’ সঠিক মাত্রায় শিশুর শরীরের না থাকলে মেসেলস ও ডায়রিয়া জাতীয় অসুখ দেখা দেয়। ভিটামিন ‘এ’ শিশুর শরীরের থাকলে শিশু সুস্থ্য ও সবল থাকে। সহজে রোগ হয় না। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। চোখের দৃষ্টি ঠিক থাকে। মায়ের বুকের হলুদ দুধ, শাকসবজি, ফলমূল শিশুদের খাওয়ানো উচিত। এছাড়া ভিটামিন ‘এ’ কম থাকলে শিশুকে পামতেল খাওয়ানো যেতে পারে।

ভিটামিন ‘এ’ র অভাবজনিত রোগ
ভিটামিন ‘এ’ শরীরে কম থাকলে যে রোগটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেটি হল ‘রাতকানা রোগ’। ভিটামিন ‘এ’-র অভাবে এই রোগ সাধারণত হয়ে থাকে। রাতকানা রোগ হলে রোগী দিনের বেলায় আলোতে স্বাভাবিক চলাফেরা করে। কিন্তু রাতের বেলায় দেখতে অসুবিধে হয়। অনেকে রাতকানা রোগের জন্য রাতে একেবারেই দেখতে পায়না। আবার অনেকে ভুল দেখে। ভিটামিন ‘এ’ শরীরে কম থাকলে শরীরে প্রাপ্ত লৌহের স্বাভাবিক ব্যবহারে ঘাটতি ঘটে। ফলে রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয়। যার থেকে অ্যানিমিয়া হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। ভিটামিন ‘এ’-র অভাব হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। কম বয়সে মুখে বলিরেখা দেখা দেয়। বার্ধক্য জনিত সমস্যা তৈরি হয়। eye/চক্ষু গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে ২১% মানুষের শরীরে টিউমার বা স্কিন ক্যান্সার হয় ভিটামিন ‘এ’-র অভাবে। মূলত এইডস ও স্তন ক্যান্সার হয়। তাছাড়া নিশ্বাসের সমস্যা, ভ্রুনের সমস্যা, চুল পরার সমস্যা হয়ে থাকে ভিটামিন’এ’ এর অভাবে।আমরা সাধারণত যে খাবার খেয়ে থাকি তার থেকেই ভিটামিন ‘এ’-র চাহিদা অনেকটা পূর্ণ হয়ে যায়। বাকিটা ভিটামিন ‘এ’ জাতীয় খাবার খেয়ে ঘাটতি পূরণ করা হয়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিটামিন ‘এ’ গ্রহণ করা উচিত নয়। অতিরিক্ত ভিটামিন ‘এ’ শরীরের বিকাশে খারাপ প্রভাব ফেলে। মাংসপেশি শিথিল হয়ে যায়। লোহিত রক্ত কনিকা উৎপাদনে ব্যঘাত ঘটে। মাসিক রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। লিভারের সমস্যা দেখা দেয়। ত্বক খসখসে হয়ে যায়। মানব দেহে ভিটামিন ‘এ’-র প্রয়োজন আছে। তবে তা শরীরের দরকারের মাত্রা অনুযায়ী। শিশু, মহিলা, পুরুষ সকলের শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী ভিটামিন ‘এ’-র যোগান থাকা উচিত।

তথ্যসূত্র: Wikipedia

এই পাতাটি ১৯৪বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626