উত্তর : এ্যাজমা শ্বাসনালির প্রদাহজনিত রোগ। এর বংশগত কিছু কারণ এবং পরিবেশগত কিছু কারণ রয়েছে। দূষিত বায়ু ও এলার্জির উপাদানের ( যেমন ধূমপান, ধুলাবালি ইত্যাদি) সংস্পর্শে এলে এজমা হতে পারে বা বৃদ্ধি পেতে পারে। অ্যাজমা হলে নির্দিষ্ট চিকিৎসা রয়েছে।
প্রশ্ন ২: এ্যাজমা কি পুরোপুরি ভালো হয়?
উত্তর : আসলে শতভাগ ভালো হয়ে যাবে, এটি বলা যায় না। তবে দেখা গেছে, যাদের অ্যাজমা ছোট বয়সে হয় এবং তারা যদি ঠিক চিকিৎসা নেয়, তাহলে এটি কিছু কিছু সময়ে একেবারে নির্মূল হয়ে যায়। বড়দের রোগ নির্মূল করা যায় না, তবে চিকিৎসা করে এজমা নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব।
প্রশ্ন ৩ : এ্যাজমা রোগের লক্ষ্মণ কি?
এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দেয়-
*কাশি
*শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস নিতে সমস্যা দেখা দেওয়া *শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় বাঁশির মত শব্দ হওয়া
*হাঁচি ও নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া
*বুকে ভার অনুভব করা বা বুকের চাপা ব্যথা
প্রশ্ন ৪ : কিভাবে এ রোগ নির্ণয় করা হয়?
ক. সাধারণত চিকিৎসকগন রোগীর লক্ষণ দেখে ও স্টেথোস্কোপের মাধ্যমে বুক পরীক্ষা করে এজমা রোগ নির্ণয় করেন।
খ. স্পাইরোমেট্রি পরীক্ষার মাধ্যমে ( ফুসফুসের এক ধরনের পরীক্ষা)।
অন্যান্য বেশ কিছু রোগের ন্যায় এজমা রোগের প্রধান ঔষধ হল স্টেরয়েড ও ব্রঙ্কো-ডায়ালেটর । স্টেরয়েড ছাড়া এ রোগের চিকিৎসা দেওয়া উচিত না। কিন্তু মুখে খাওয়ার স্টেরয়েডের বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। স্বল্প মেয়াদে তেমন কোন সমস্যা না হলেও দীর্ঘ মেয়াদে নানা সমস্যা হয়।
কিন্তু ইনহেলার এ স্টেরয়েড থাকে অতি সামান্য এবং তা সরাসরি ফুসফুসে যায় শরীরের অন্য অংশকে বাইপাস করে। সেজন্য এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। শুধু এটা ব্যবহারের পরে মুখ কুলি করতে হবে। তাছাড়া এজমা চিকিৎসার ব্যবহৃত অন্যান্য ঔষধ যেমন সালবিউটামল, সালমেটেরল ইত্যাদি অতি স্বল্প মাত্রায় সরাসরি শ্বাসতন্ত্রে ইনহেলারের মাধ্যমে সহজে ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া মন্টেলুকাস্ট জাতীয় ঔষধও মিয়মিত ব্যবহার করা হয়। তাই বলা যায় ইনহেলার হল এ্যাজমার সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি ।
প্রশ্ন ৬ : #কতদিন এ্যাজমার ঔষধ চলবে ?
উত্তর :
ক. ২-৩ মাস ? খ. ২-৩ বছর ? গ. সারা জীবন?
আসলে এ্যাজমার চিকিৎসা কতদিন চলবে এর উত্তর সহজভাবে বলা মুসকিল কারণ বেশিরভাগ এ্যাজমাই দীর্ঘমেয়াদী অসুখ । এর চিকিৎসার দৈর্ঘ্য নির্ভর করে রোগির বয়স,এলারজেন এর সংস্পর্শ ও এজমার ধরনের উপর। দেখা যায় শিশুদের এ্যাজমা দীর্ঘদিন চিকিৎসা করলে ভালো হয়ে যায় এবং তা আর ফিরে আসে না। আবার কোন কোন শিশুর এ্যাজমা ভালো হওয়ার কিছু দিন পরে আবার ফিরে আসে। বড়দের এ্যাজমা সাধারণত চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রণে থাকে কিন্তু সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায় না। সিজনাল এ্যাজমা একটি সিজনে হাজির হয় এবং ঐ সময়টা ঔষধ নিলেই হয়। সুতরাং যে বিষয়গুলোর সংস্পর্শে এ্যাজমা বেড়ে যায় সেগুলো এভয়েড করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন নূন্যতম ডোজে স্টেরয়েড যুক্ত ইনহেলার ব্যবহার করাই হলো সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য চিকিৎসা। সবক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চলতে হবে।