অনেক সময় চোখের পাতায় ছোট ছোট ফোঁড়া বা ফুসকুড়ির মতো যেটা বের তাকেই অঞ্জনি বলেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যা স্টাই বা হরডিওলাম। অঞ্জনি হলে চোখ ফুলে যায়। অনেক সময় ব্যথায় চোখের পাতা খুলতে কষ্ট হয়। অনেক সেটাতে সময় পুঁজও হয়ে যায়। অঞ্জনি অনেকেরই বারবার হয়, সে ক্ষেত্রে গ্রন্থির মুখে কোনো সমস্যা বা দীর্ঘদিনের পাপড়ির প্রদাহ, পাপড়িতে খুশকি ইত্যাদি আছে কি না, দেখে নিতে হবে। তবে এ নিয়ে এতটা দুশ্চিন্তার কারণ নেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অঞ্জনি এক সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। তখন ভেতরের ময়লা বের হয়ে আসে। এর চিকিৎসাও খুবই সাধারণ। এক টুকরা তুলার বল বা কাপড়ের বল গরম পানিতে ভিজিয়ে দিনে অন্তত চারবার সেঁক দিতে হবে। কখনো প্রয়োজন হলে অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগানো যেতে পারে। বরিক পাউডারের সেঁক বেশ জনপ্রিয়, এটি অনেক সময় জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে।
অঞ্জনি কেন হয়?
চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সৈয়দ একে আজাদ লিখেছেন— অনেকের ধারণা, চোখে ময়লা জমে বা সংক্রমণ হলেই কেবল অঞ্জনি দেখা দেয়। তবে সব সময় যে সংক্রমণ থাকবে, তা নয়। চোখে অনেক ক্ষুদ্র তেল গ্রন্থি আছে। বিশেষ করে চোখের পাতার ওপর। মৃত কোষ, ময়লা বা তেল জমে ওই ছোট ছোট তেল গ্রন্থিগুলোর মুখ বন্ধ করে দেয়। তখন ভেতরে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেওয়ায় অঞ্জনি হয়। এটা চোখের ভেতরে এবং বাইরে হতে পারে। অঞ্জনি হলে যেসব বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
অঞ্জনি হলে কখনো চোখ ঘঁষবেন না। এর ওপর জোরে চাপ দেবেন না বা বারবার হাত দিয়ে স্পর্শ করবেন না। গরম সেঁক দিলে পুঁজ বেরিয়ে যাবে আর অঞ্জনি ভালো হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি। একটি পরিষ্কার কাপড় নিয়ে সেটাকে গরম পানিতে ডুবিয়ে নিন। কাপড় থেকে পানি নিংড়ে চোখের ওপর ৫ থেকে ১০ মিনিট রাখুন। এভাবে দিনে বেশ কয়েকবার সেঁক দিন। চোখে অঞ্জনি হলে কখনোই বেশি ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না। এতে চোখের ক্ষতি হবে। হালকা গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে তুলায় করে চোখের পাতা পরিষ্কার করুন।
গরম টি-ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। ব্ল্যাক টি সব চেয়ে ভালো কাজ করে। কারণ, এতে থাকে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। চা পানের পর ব্যবহৃত টি-ব্যাগ ঠান্ডা করে চোখের ওপর রাখুন। ৫ থেকে ১০ মিনিটের মতো কিছুটা আরাম পেতে পারেন।
চোখ লাল হলে বা বেশি ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।