করোনা কেবল শ্বাসতন্ত্রেই নয়, শরীরের প্রতিটা অঙ্গকেই কমবেশি আক্রমণ করে। বিশেষত এটি হৃদ্যন্ত্রের অনেকগুলো জটিলতা তৈরি করে। গবেষণা বলছে, করোনায় সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের প্রায় এক–তৃতীয়াংশেরই হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা হয়। এসব সমস্যার মধ্যে অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন, হার্ট অ্যাটাক, হৃৎপেশির প্রদাহ, হৃদ্যন্ত্রের বৈকল্য (হার্ট ফেইলিউর) অন্যতম।
অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন:
করোনা রোগীর কখনো মনে হতে পারে যে বুক ধড়ফড় করছে। রক্তে অক্সিজেন–স্বল্পতার জন্য এটি হতে পারে। রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা কমে হৃৎস্পন্দন ব্যাহত হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাক:
যাঁদের আগে থেকে হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস রয়েছে, করোনায় তাঁদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি। আবার করোনায় সংক্রমিত রোগীদেরও নতুন করে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক।হৃৎপেশির প্রদাহ: করোনা হৃদ্কোষের প্রত্যক্ষ ক্ষতি করতে পারে। করোনার ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রায় এক–চতুর্থাংশ রোগীর এ সমস্যা হওয়ার নজির রয়েছে।
হৃদ্যন্ত্র বিকল বা হার্ট ফেইলিউর: গবেষণা বলছে, করোনায় সংক্রমিত শতকরা ২৩ ভাগ রোগীর হার্ট ফেইলিউর হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বুঝবেন যেভাবেঃ
কিছু কিছু উপসর্গ হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা নির্দেশ করে। এসব উপসর্গ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে। এগুলো হলো বুকে ব্যথা, পালপিটিশন বা বুক ধড়ফড় করা, পায়ে পানি আসা, চিত হয়ে শুয়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট হওয়া, ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসা, মাথা ঘোরানো, অতিরিক্ত দুর্বলতা, ঠোঁট-মুখ নীলাভ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
করণীয়ঃ
• করোনায় সংক্রমিত হলে সম্পূর্ণ শারীরিক ও মানসিক বিশ্রামে থাকতে হবে।
• পানিশূন্যতা রোধ করতে হবে।
• উল্লিখিত উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
• নিয়মিত পালস অক্সিমিটারের সাহায্যে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করতে হবে।
• পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে।
• ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা পরখ করতে হবে।
• প্রয়োজনে ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফিসহ রক্তের আনুষঙ্গিক পরীক্ষা করতে হবে।