রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

রোজায় ডায়রিয়া রোগীদের সাহরি ও ইফতারে করণীয় কী  ?

২৮-০৪-২০২২

রোজায় ডায়রিয়া রোগীদের সাহরি ও ইফতারে করণীয় কী ?

সাম্প্রতিক সময়ে গ্রীষ্মে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। এতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অফিস কিংবা ব্যক্তিগত কাজে বাইরে বের হলে বেশ ক্লান্তিবোধ হয়। আবার রাজধানীতে এখন ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব চলছে। এ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগের শেষ নেই।
আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআরবি) তথ্য অনুযায়ী, গত ১৬ মার্চ গত ৬০ বছরে প্রথমবারের মতো দৈনিক ডায়রিয়া রোগী ভর্তির সংখ্যা এক হাজার অতিক্রম করে। ২৮ মার্চ রোগী ভর্তির সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার ৩৩৪ জনে। এদিকে গ্রীষ্মে ডায়রিয়া প্রকোপের মধ্যে অনেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় রোজা রাখছেন। সাধারণত রোজা রাখা হলে খাদ্য তালিকায় অনেক পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হয় রোজদারের শারীরিক সুস্থতার জন্য।পুষ্টিবিদ সামিয়া তাসনিম ডায়রিয়া রোগীদের সাহরি ও ইফতারের বিষয়ে বলেন, বর্তমানে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডায়রিয়া রোগীর প্রকোপ বাড়ছে। এ কারণে গ্রীষ্মের এই রমজানে ডায়রিয়া আক্রান্তসহ সাধারণ মানুষদেরও সাহরি ও ইফতারে সতর্ক থাকা উচিত।

সামিয়া তাসনিম আরও বলেন, ডায়রিয়া বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটা পানিবাহিত ও খাদ্য সংক্রান্ত কারণে হতে পারে। প্রথমে শনাক্ত করতে হবে রোগটা কীভাবে হলো। এরপর সেই চিকিৎসাপদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে ও সচেতন থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পানিবাহিত ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে প্রথমেই আমাদের পানিকে জীবাণুমুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আর খাদ্য সংক্রান্ত ক্ষেত্রে খাদ্যের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। ইফতার ও সাহরিতে যে খাদ্য গ্রহণ করা হচ্ছে তা কীভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে, কারা প্রস্তুত করছে, কতটা স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর- এ রকম বেশ কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। এসব প্রশ্নের উত্তর জানা প্রয়োজন।

এ ছাড়াও ‘সুস্থ থাকুন রমজানেও’ অনুষ্ঠানে আলোচনা করেছেন এভারকেয়ার হাসপাতালের পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী।
রোজায় ডায়রিয়া হলে শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে। বিশেষ করে ডায়রিয়া চলাকালে শরীরের সোডিয়াম ও পটাশিয়াম কমে বা বেড়ে গিয়ে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এই সময় সাধারণত তরল ও লিকুইড খাবার খেতে হবে। সহজেই হজম হয়, এমন খাবার খাওয়া উচিত। জাউভাত, কাঁচকলা, নরম মাছ, মুরগির মাংস, আলুর তরকারিসহ কম তেল ও কম মসলায় রান্না করা খাবার ডায়রিয়ার পথ্য হিসেবে ভালো কাজ করে। ডায়রিয়া চলাকালে দুর্বল হওয়া যাবে না। তাই প্রোটিনের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে ডিমের সাদা অংশ, মাছ বা মুরগির স্যুপ এবং মাছের তরকারির ঝোলও প্রোটিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি শরীরের ফ্লুইডের চাহিদা পূরণ করে।

ইফতারে একবারে অনেক খাবেন না
রোজায় ডায়রিয়া যাতে না হয়, সে জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ইফতারের সময় একসঙ্গে অনেক খাবার খাওয়া উচিত নয়। মনে রাখবেন, খাবার ভালোভাবে ঢেকে না রাখলে বা সঠিকভাবে হজম না হলেও ডায়রিয়া হতে পারে। সুতরাং পরিমিত খাবার গ্রহণ আপনাকে সুস্থ রাখবে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

ইফতারে একবারে অনেক খাবেন না
তরলজাতীয় খাবার বাইরে থেকে কিনে খাবেন না। কোনো প্রকার তরলজাতীয় খাবার বাইরে থেকে কিনে খাবেন না। পানিবাহিত জীবাণু ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ। তাই এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে শুধু বাজারের কেনা শরবত বা জুসই নয়, সস, কেচাপ, চাটনি ইত্যাদি খেলেও ডায়রিয়া হতে পারে। বাজার থেকে কেনা খাবারে যদি মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ না থাকে বা খাবারে মাছি বসে, সেই খাবারগুলোও কিন্তু ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে। তাই রোজায় চেষ্টা করবেন বাইরের কেনা খাবারগুলো এড়িয়ে যেতে।

বিশুদ্ধ পানির বিকল্প নেই
ইফতারে খেতে হবে প্রচুর তরলজাতীয় খাবার। ডায়রিয়ার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পানিশূন্যতা। ডি-হাইড্রেশন হলেই অনেক ধরনের জটিলতা হতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় তরলজাতীয় খাবার বা পানির পরিমাণ বাড়াতে হবে। বিশুদ্ধ পানি পান এ সময় খুব জরুরি। ফুটিয়ে পানি খাওয়াই ভালো। তা ছাড়া ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত অবশ্যই চিনিছাড়া ফল বা ফলের জুস খাবেন। তরলজাতীয় খাবার, যেমন তরল সাগুদানা, চিড়া ভিজিয়ে নরম করে খেলে বা জাউভাত খেলে ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার করা সম্ভব। ডায়রিয়া শুধু প্রতিকার নয়, প্রতিরোধেও আমাদের সচেতন হতে হবে। অবশ্যই চেষ্টা করবেন একই তেলে বারবার ভাজা খাবার না খেতে।
এসব বিষয় মেনে চলতে পারলে এই গরমেও রোজা রাখতে পারবেন সুস্থভাবে।

এই পাতাটি ২৪৮বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626