রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

মাইগ্রেনের কারণ, প্রকারভেদ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

১০-০৯-২০২০

মাইগ্রেনের কারণ, প্রকারভেদ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

মাথা ব্যাথা হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। এটি বর্তমান সময়ের একটি কমন বা সাধারণ রোগ। বিভিন্ন কারণে মাথা ব্যাথা হয়ে থাকে। মাইগ্রেন অন্যতম একটি কারণ। মাইগ্রেন শব্দটি ফারসি, যা গ্রিক শব্দ হেমিক্রেনিয়া থেকে এসেছে। এর অর্থ অর্ধেক এবং ক্রেনিয়া অর্থ মাথার খুলি। এই ব্যাথা অর্ধ মাথায় হয় বলে একে বাংলায় আধ-কপালি বলা হয়। সারা বিশ্বে শতকরা ১১ জন মানুষ মাইগ্রেনজনিত মাথা ব্যাথায় ভোগেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে পুরুষের চেয়ে মহিলারা তিন গুণ বেশি এই রোগে ভোগেন। গবেষকরা ভবিষতে মাইগ্রেনজনিত মাথা ব্যাথা রোগ বদ্ধির আশঙ্কা করছেন। তাই আমাদের এখন থেকে বেশি বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

মাইগ্রেন কী?
মাইগ্রেন এক ধরনের মাথা ব্যাথা যা মাথার এক পাশ থেকে শুরু হয়ে সম্পূর্ণ মাথায় ছড়িয়ে যায়। রক্তে সেরোটোনিন এর মাত্রা পরিবর্তিত হলে মস্তিষ্কে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়। এছাড়াও যাদের মাইগ্রেন হবার প্রবণতা আছে তাদের শব্দ, আলো, গন্ধ কোনো কিছুই সহ্য হয় না। মাথা ব্যাথার সাথে বমি বমি ভাব এবং বমিও হতে পারে।

মাইগ্রেনের কারণ-
মাইগ্রেন হবার সঠিক কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। বিভিন্ন কারনে মাইগ্রেন হতে পারে যেমন-বংশগত ভাবে হতে পারে। মহিলাদের পিরিওডের সময় এটি বেশি হয়। এছাড়াও চকলেট, পনির, কফি বেশি খাওয়া, দুশ্চিন্তা, জন্মবিরতিকরন ওষুধ, অতিরিক্ত ভ্রমন, অনিদ্রা, দীর্ঘক্ষণ টিভি দেখা ও কম্পিউটারে কাজ করা ইত্যাদি কারণে এ রোগ হতে পারে।

মাইগ্রেনের প্রকারভেদ-
মাইগ্রেনকে কয়েকভাবে ভাগ করা যায়। যেমন-কমন, ক্লাসিক্যাল, অপথালমোপ্লেজিক, হেমোপ্লেজিক, ব্যাসিলার আর্টারি ইত্যাদি। তবে কমন ও ক্লাসিক্যাল মাইগ্রেন বেশি দেখা যায়। কমন মাইগ্রেনে বমি বা বমি বমি ভাব হয়, দৃষ্টিভ্রম হয় না। ক্লাসিক্যাল মাইগ্রেনে দৃষ্টিভ্রম হয়, রোগী চোখের সামনে আলোর ঝলকানি ও চোখে শর্ষে ফুল দেখে।

মাইগ্রেনের লক্ষণ-
মাথা ব্যাথা ও বমি ভাব এ রোগের প্রধান লক্ষণ। মাইগ্রেন মূলত শৈশব, কিশোর বা প্রারম্ভিক প্রাপ্তবয়স্কা হতে শুরু হয়ে মাঝ বয়স পর্‍যন্ত হতে পারে। মাথা ব্যাথা শুরু হলে কয়েক ঘন্টা বা কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মাথার যে কোনো অংশ থেকে এ ব্যাথা শুরু সম্পূর্ণ মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাথা ধক ধক করে। শারিরিক কাজ করলে ব্যাথা বৃদ্ধি পায়। চোখের পেছনে ব্যাথা হতে পারে, আলো, গন্ধ ও শব্দ অসহ্য লাগে। শরীর খুব দুবর্ল লাগে, কাজে মনো্যোগ হারিয়ে যায়।

মাইগ্রেন এর চিকিৎসা-
মাইগ্রেন এর চিকিৎসা হিসেবে প্রতিরোধ ও প্রতিকার এই দুই ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। কথায় আছে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। প্রতিরোধ হিসেবে সঠিক সময়ে ঘুমানো ও পরিমিত ঘুম দরকার। অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা, তীব্র রোদ বা তীব্র ঠান্ডা পরিহার করতে হবে। উচ্চ শব্দ বা কোলাহলপূর্ণ স্থান ত্যাগ করতে হবে। টিভি বা কম্পিউটারে বেশিক্ষণ কাজ করা যাবে না।

যেসব খাবার মাইগ্রেন প্রতিরোধ করে সেগুলো বেশি করে খেতে হবে। যেমন- ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত, আলু ইত্যাদি। সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি বেশি করে খেলে উপকার হয়। এছাড়াও ডুমুর, খেজুর মাথা ব্যাথা নিরাময় করে।

মাইগ্রেন এর ওষুধ হিসেবে দুটো ধাপ রয়েছে-একটি এবোরটিব এবং অন্যটি প্রিভেনটিব। যাদের বার বার ব্যাথা হয় এবং স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয় তাদের জন্য প্রিভেনটিব গ্রুপের ওষুধ কার্যকর। যেমন-পিজোটিফেন, বিটাব্লকার, অ্যামট্রিপটাইলিন ইত্যাদি।

পরিশেষে মনে রাখতে হবে মাইগ্রেন একটি প্রাথমিক পর্যায়ের হেডেক, যা নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। আর মাথা ব্যাথা মাইগ্রেন নয়। নিউরোলজিস্ট ও চেকআপের মাধ্যমে এর চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।

এই পাতাটি ৪১৭বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626