রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

কিটো ডায়েটের সুবিধা ও অসুবিধা

২৭-০৮-২০২০

কিটো ডায়েটের সুবিধা ও অসুবিধা

কিটো বা কিটোজেনিক ডায়েট পদ্ধতিতে খাবারে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ কমিয়ে ফ্যাট জাতীয় খাবারের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। এর ফলে অতিরিক্ত ফ্যাট কিটোন উৎপন্ন করে যা কিটোসিস প্রক্রিয়ায় বিপাকীয় হার বৃদ্ধি করে প্রচুর ক্যালরি উৎপন্ন করে। আবার কিটোনের কারণে প্রচুর ক্যালরিও ব্যয় হয়। এর ফলে শরীরে ফ্যাট জমতে পারে না। তাই কিটো ডায়েট দ্রুত শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক। এছাড়াও এই ডায়েট পদ্ধতি অনুসরণের আরও অনেক উপকারী দিক রয়েছে। এছাড়াও সঠিক ভাবে এই ডায়েট অনুসরণ না করলে কিছু শারীরিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। নিম্নে কিটো ডায়েটের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করা হলো।

কিটো ডায়েটের সুবিধা
১) শরীরের ওজন কমাতে: কিটোজেনিক ডায়েট কোনো রোগ বালাই ছাড়াই শরীরের ওজন কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে লো-ফ্যাট ডায়েটের চেয়ে হাই ফ্যাট কিটো ডায়েটের কার্যকারিতা আড়াই থেকে তিনগুণ বেশি।
২) ক্ষুধা হ্রাস করা: ক্ষুধা পাওয়া ডায়েটের সবচেয়ে খারাপ দিক। কিটো ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম খাওয়া হয় এবং প্রোটিন ও ফ্যাট বেশি খাওয়া হয়। আর ফ্যাট হজম হতে বেশি সময় লাগে। এর ফলে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগে না।
৩) ক্যান্সার রোগে: এই ডায়েট ক্যান্সার কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করে। ফলে ক্যান্সার রোগীকে এই ডায়েটে উৎসাহিত করা হয়ে থাকে। এছাড়াও কিটো ডায়েট মেনে খাবার খেলে মস্তিকের নিউরণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ফলে সমস্ত মস্তিকের ক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
৪) হৃদরোগ কমাতে: কিটো ডায়েট পদ্ধতিতে খাবার খেলে দেহে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে, ব্লাড প্রেসার ও ট্রাইগ্লিসারাইড মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায় না। এছাড়াও ফ্যাট থেকে উৎপন্ন কিটোন শরীরে ফ্যাট জমতে দেয় না। ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কমে যায়।
৫) ডায়বেটিক রোগীদের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে: কিটোজেনিক ডায়েটের অতিরিক্ত কিটোন ইনসুলিন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে রক্তের চিনি কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে টাইপ-২ ডায়বেটিক রোগীদের জন্য এই ডায়েট পদ্ধতির মাধ্যমে ওষুধ ছাড়াই সুস্থ থাকা সম্ভব।
৬) ব্রণের সমস্যা দূর করতে: কিটো ডায়েটে চিনি ছাড়া খাবার খেতে বলা হয়। এছাড়াও সকল খাবার রান্না করে খেতে বলা হয়। ফলে ব্রণের সমস্যা কম হয়। এছাড়াও কিটোজেনিক ডায়েটে শরীরের প্রদাহ কমে যায় ফলে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ সুস্থ থাকে।

কিটো ডায়েটের অসুবিধা
সঠিক ভাবে কিটো ডায়েট মেনে না চললে কিছু শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। নিম্নে এর অসুবিধাসমূহ আলোচনা করা হল-

১) কিটো ফ্লু: সঠিক ভাবে কিটো ডায়েট অনুসরণ না করলে কিছু কিটো ফ্লু দেখা দিতে পারে। যেমন-মাথা ব্যাথ্যা, শারীরিক ক্লান্তি, ঘুম কম হওয়া, মাথা ঘোরা, ক্ষিদে বেড়ে যাওয়া, হজমে সমস্যা, বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি। তাই কিটো ডায়েট শুরুর করার জন্য শরীরকে প্রস্তুত করতে হবে। ডায়েটের শুরুতে নরমাল খাবারে ধীরে ধীরে ফ্যাট বৃদ্ধি করতে হবে এবং কার্বোহাইড্রেট কমাতে হবে।
২) পানি ও লবণের ভারসাম্যহীনতা: হঠাৎ করে কিটো ডায়েট শুরু করলে শরীরে পানি ও মিনারেলের ভারসাম্য কমে যেতে পারে। ফলে রক্তচাপের কম বেশি হতে পারে। এতে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া বা লবণ বাদ দেবার প্রয়োজন হতে পারে।
৩) হজমের সমস্যা: অতিরিক্ত ফ্যাট গ্রহণ করার ফলে কিটোজেনিক ডায়েটে হজমের সমস্যা হতে পারে। কারও কারও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এতে ফাইবার জাতীয় সবজি বেশি করে খেতে হবে। ডায়রিয়া হলে স্যালাইন ও ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। তবে ২-৩ সপ্তাহ ডায়েট চার্ট মেনে চললে ধীরে ধীরে তা শরীরের সাথে মানিয়ে যায়।
৪) দুর্গন্ধযুক্ত নি:শ্বাস ও প্রস্রাব: প্রচুর ফ্যাট, প্রোটিন ও ফলমূল গ্রহণ করার কারণে বাই প্রোডাক্ট হিসেবে যে রাসায়নিক পদার্থ উৎপন্ন হয় তা প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায়। এর কারণে প্রস্রাবের দুর্গন্ধ হতে পারে। এমনকি নি:শ্বাসের সাথে দুর্গন্ধ আসতে পারে। মাউথওয়াশ ব্যবহার করে নি:শ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করা যায়।

পরিশেষে বলা যায়- কিটোজেনিক বা কিটো ডায়েটে সামান্য অসুবিধা থাকলেও এর সুবিধাই বেশি। কিটো ডায়েট মূলত ডায়বেটিক রোগী এবং যারা অতিরিক্ত মোটা ও ওজন কমাতে চান তাদের জন্য কার্যকরী। আপনি যদি খেলোয়াড় বা বডি বিল্ডার হতে চান তবে এই ডায়েট আপনার জন্য নয়। এই ডায়েট থেকে উপকারিতার পাবার জন্য কঠোর ভাবে এর নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে।

এই পাতাটি ৫৪১বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626