শিশুদের ব্লাড ক্যান্সার একটি অত্যান্ত দুরারোগ্য রোগ । রক্তের শ্বেত কণিকা ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যায় । এই রোগ প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের বেশি হয় । কেন এই রোগের হার শিশুদের মধ্যে বেশি- সে ব্যাপারে এখনও গবেষনা করে খুব বেশি কিছু বের করতে পারেননি। তবে প্রাথমিক পর্যায়েই রোগটি ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এর নিরাময় সম্ভব।
শিশুদের মধ্যে সাধারণ কিছু লক্ষণ সনাক্তের মাধ্যমে বের করা সম্ভব সে লিউকেমিয়ায় ভুগছে কিনা। সেসব লক্ষণগুলোঃ
১. ঘন ঘন জ্বর
কোনো কারণ ছাড়াই কিছুদিন পরপর জ্বরে ভোগাটা লিউকেমিয়ার অন্যতম লক্ষণ। কেবল শিশুদের মধ্যেই নয়, বড়দেরও ঘন ঘন জ্বর হয় লিউকেমিয়া হলে। বিশেষ করে সেই জ্বর যদি দীর্ঘদিন থাকে, তবে সাধারণ চিকিৎসা না করে বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নেয়াই ভালো।
২. হঠাৎ করেই রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়া
রক্তে হঠাৎ করেই হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়াটাও শিশুদের মধ্যে লিউকেমিয়া হওয়ার আরেকটি প্রধান লক্ষণ। অভিভাবকেরা যদি ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে লক্ষ্য করেন শিশুর চামড়া হঠাৎ করেই ফ্যাকাশে হয়ে গেছে, তবে সঙ্গে সঙ্গেই রক্ত পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। ৯৫-৯৯ শতাংশ লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের রক্তে হিমোগ্লোবিন হঠাৎ করেই কমে যায়।
৩. হাড়ের সন্ধিতে ব্যাথা
শিশুর হাঁটু, কব্জি বা কনুই যদি হঠাৎ করেই ফুলে ওঠে এবং ব্যাথা করতে শুরু করে, তবে তা হতে পারে বড় দুশ্চিন্তার কারণ। সাধারণত শিশুদের এটা হয় না। কিন্তু এমনটি দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গেই বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করা উচিৎ।
৪. খিঁচুনি বা হঠাৎ জ্ঞান হারানো
কিছু কিছু ক্ষেত্রে লিউকেমিয়া আক্রান্ত শিশুর মস্তিষ্কেও সংক্রমণ হয়। সেক্ষেত্রে শিশুটি হঠাৎ হঠাৎ জ্ঞান হারাবে এবং মাঝেমধ্যেই খিঁচুনি হবে। এর সঙ্গে শিশুটি তীব্র মাথাব্যাথাও অনুভব করবে। সেইসঙ্গে হবে বমি। দৃষ্টিশক্তিও হবে ক্ষীণতর।
৫. র্যাশ এবং মাড়ির সমস্যা
অ্যাকিউট মায়লোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া ব্লাড ক্যান্সারেরই আরেকটি ধাপ। এর অন্যতম লক্ষণ শরীরজুড়ে তীব্র চুলকানিসহ র্যাশ। এছাড়াও মাড়ি ফুলে ওঠা ও ব্যাথা হওয়ার পাশাপাশি মাড়ি থেকে রক্ত ঝরাটাও এই রোগের অন্যতম লক্ষণ।
৬. শ্বাসকষ্ট
লিউকেমিয়া হলে গলার থাইমাস গ্ল্যান্ডও আক্রান্ত হয় খারাপভাবে। এসময় শিশুদের কাশি এবং সর্দির সমস্যা দেখা যেতে পারে। সেইসঙ্গে যদি শ্বাসকষ্টও শুরু হয়, তবে শিশুকে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন।
৭. অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং ঘা না শুকানো
সাধারণত শিশুরা যখন আঘাত পায়, বড় ক্ষত না হলে রক্তপাত খুব দ্রুতই থেমে যায়। তবে লিউকেমিয়া আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। শিশুটির তখন রক্তপাত থামতে চায় না কিছুতেই। সেইসঙ্গে ক্ষতস্থানটিও সারতে সময় লাগে অনেকদিন।
এইসব লক্ষণের পাশাপাশি লিভার ও স্প্লিনের আকার বেড়ে যাওয়া এবং গলার নিচের অংশ ফুলে ওঠাও লিউকেমিয়ার লক্ষণ। সেই সঙ্গে শিশুর প্রানোচ্ছ্বলতা কমে যাওয়াও লিউকেমিয়ার অন্যতম লক্ষণ।
আলাদা আলাদা ভাবে এসব লক্ষণ দেখা দিলে আপনার শিশুর রক্তে ক্যান্সার নাও হতে পারে। তবে সব লক্ষণ একত্রে দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কারণ যতো দ্রুত এই রোগ ধরা পড়ে, ততটাই বেড়ে যায় এর নিরাময়ের সম্ভবনা।
কারণ
সঠিক কারন এখনও জানা যায়নি তবে কিছু কারন ধারণা করা হয়। যেমনঃ ক্রোমজোমাল এবনরমালিটি , ফিজিক্যাল এজেন্ট ,আইওনাইজিং রেডিয়েশন ,কেমিক্যালস ,ভাইরাস, জেনেটিক এবনরমালিটি।