পাকস্থলীর ক্যান্সার রোগটি গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার নামেও পরিচিত, এটি সাধারণত পাকস্থলীর আবরণী কলা থেকে উৎপত্তি লাভ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন কম-বেশি সবার শরীরেই হয়ে থাকে। তবে ইনফেকশন মানেই তা থেকে ক্যান্সার হবে এমন নয়। ইনফেকশন দীর্ঘদিন থাকলে পাকস্থলির কোষে এমন কিছু পরিবর্তন আসে যা ক্যান্সার হতে সাহায্য করে। পাকস্থলীর ক্যান্সার এমন একটি রোগ যা আমাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাসের প্রতিফলন হিসেবে আসে।
আমাদের দেশে বেশিভাগ ক্ষেত্রেই পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় হয় না। পেটের অনেক ধরনের অসুখকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ভেবে রোগী দীর্ঘদিন গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন করেন। কিন্তু পেটের এই সমস্যা পাকস্থলীর ক্যান্সারের কারণেও হতে পারে। বলা বাহুল্য গ্যাষ্ট্রিকের ওষুধ যেমন- পিপিআই দীর্ঘদিন খেলেও এ অঙ্গে ক্যান্সার হতে পারে। এ ওষুধ থেকে রক্তে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ কমে গিয়ে হাড়ে অস্টিওপোরোসিস হতে পারে।
পাকস্থলীর ক্যান্সারের বিভিন্ন কারণঃ
- হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে ক্যান্সার হতে পারে।
- মদপান করলে পাকস্থলীর ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ক্যান্সার হয়।
- টিনজাত খাবার বেশি গ্রহন করলে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বর্তমানে অনেকেই টিনজাত খাবার প্রচুর পরিমাণে খাচ্ছেন। ফলে দেখা দিচ্ছে ক্যান্সার।
- অত্যধিক লবণ আছে এমন খাবার গ্রহণ করলে পাকস্থলীর ক্যান্সার হয়।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অভাব রয়েছে এমন খাবার বেশী গ্রহণ করলেও কিন্তু পাকস্থলীর ক্যান্সার হতে পারে। ফলমূল ও শাকসবজিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
- ধূমপান করলে এবং বংশগত কারণেও দেখা দিতে পারে পাকস্থলীর ক্যান্সার।
- নারীদের চেয়ে পুরুষ পাকস্থলীর ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হয় ।
পাকস্থলীর ক্যান্সার রোগের প্রায় পেটে অস্বস্থি ছাড়া আর তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। পাকস্থলীর ক্যান্সারের উপসর্গ :
- অল্প খেলেই তৃপ্তি চলে আসে
- পেট ফেঁপে থাকে
- পেট ফুলে যায়
- বমি হয়
- রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয়
- রক্ত পায়খানা হতে পারে
- রোগীর শরীরের ওজন কমে যায়।
এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। পাকস্থলীর ক্যান্সার নির্ণয়ঃ
- রক্তের পরীক্ষা
- এন্ডোসকপি
- কলোনোসকপি
- পেটের আলট্রাসনোগ্রাম
- এক্স-রে
চিকিৎসাঃ
অপারেশনের মাধ্যমে ক্যান্সার আক্রান্ত স্থান ফেলে দিয়ে কেমোথেরাপি ও রেডিও থেরাপি দিলে রোগী সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে ।