রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

শিশুর জলবসন্তে করনীয়

০৮-০৩-২০২২

শিশুর জলবসন্তে করনীয়

প্রকৃতিতে এখন বসন্তের বাতাস। প্রতিবছর এ সময়ে শিশুদের চিকেন পক্স বা জলবসন্ত, হাম ইত্যাদি রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ জাতীয় রোগে আক্রান্ত শিশুদের অনেক মা–বাবা মাছ, মাংস, ডিম, দুধ খেতে দেন না। অনেকে শিশুর বুকের দুধ খাওয়া সাময়িক বন্ধ রাখেন। মূলত কুসংস্কারের কারণে এমনটা করা হয়। তাঁদের ধারণা, এসব খাবার খাওয়ালে শিশুর ক্ষতি হবে, শরীরে চুলকানি বাড়বে। এটা ভাবা ভুল। ওই সময় শিশু এমনিতেই অসুস্থ থাকে। এর মধ্যে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো বন্ধ রাখলে শিশু আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়।
জলবসন্ত, হাম—এসব ভাইরাসজনিত রোগ। তাই আক্রান্ত শিশুদের মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার বেশি করে খাওয়ানো উচিত। তবে এর মধ্যে কোনো খাবারে অ্যালার্জি থাকলে, সেটি এড়িয়ে চলা ভালো। অনেক সময় এসব রোগ খাদ্যনালিতে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে শক্ত খাবার খেতে কষ্ট হয়। তাই এ সময় নরম কিংবা তরল খাবার খেতে বলা হয়, যা যেকোনো খাদ্য উপাদান থেকে তৈরি হতে পারে।

চিকেন পক্স বা জলবসন্ত আসলে কী?
ভেরেসেলা জোস্টার ভাইরাস এর প্রভাবে জলবসন্ত হয়। প্রথমদিকে ছোট ছোট চুলকানিযুক্ত গোটা মাথায়, মুখমন্ডলে, গলা থেকে হাত পায়ের তালুতেও দেখা দেয়। ধীরে ধীরে আকার বড় ও তরলপূর্ণ ফোস্কার মতো হয়ে থাকে। সাধারনত ৭ থেকে ১২ দিন স্থায়ী হয়ে থাকে। পাশাপাশি শরীরে জ্বর অনুভূত হয়। ১৬ বছরের নিচে ৯০ ভাগ মানুষের চিকেন পক্স বা জলবসন্ত হয়ে থাকে ।

চিকেন পক্স বা জলবসন্ত হলে করণীয় কী?
১. শিশুর চুলকানি রোধ ও ফোস্কা শুকানোর জন্য ক্যালামিন লোশন দিন। পাশাপাশি বিশ্রাম এবং প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে দিন।
অনেকেই জলবসন্ত হলে বাচ্চাকে আমিষ এবং শাক-সবজি জাতীয় খাবার থেকে বিরত রাখেন। এই ভুল অবশ্যই করবেন না। জলবসন্তকালীন সময়ে বাচ্চার জ্বরের কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও শাক-সবজির প্রয়োজন হয়।
২. একটি ভুল আমরা অনেকেই করে থাকি, জলবসন্ত হলে বাচ্চাকে গোসল করতে না দেওয়া, বরং নিয়মিত গোসল করানো উচিৎ কারণ এটি ভাইরাস ঘটিত রোগ। একটি ফোস্কা ভেঙ্গে সেই জীবাণু থেকে একাধিক ফোস্কার জন্ম হয়। সম্ভব হলে নিমের পানি দিয়ে গোসল করাতে পারেন। যব গোসলের পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন।
৩. আপনার শিশু যদি ডাইপার পরে থাকে তাহলে ফোস্কা শুকিয়ে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ডাইপার পরানো থেকে বিরত থাকুন। বাচ্চাকে ঠাণ্ডা পরিবেশে রাখার চেষ্টা করুন। ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য আপনার শিশুর জামা-কাপড়, বিছানার চাদর এবং ব্যবহার্য জিনিসপত্র জীবাণুনাশক দ্রব্য দিয়ে পরিষ্কার করে দিন।

কোন উপসর্গগুলো দেখলে ডাক্তারের কাছে যাবেন
সাধারণত চিকেন পক্স খুব স্বাভাবিক হলেও মাঝে মাঝে এই রোগ ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে। চলুন জেনে নিই কিছু উপসর্গ যেগুলো আপনার বাচ্চার জন্য ভয়ঙ্কর, এমনকি মৃত্যুর করণও হতে পারে।
১. শিশুর জ্বর ১০২ ডিগ্রির উপরে ৩ থেকে ৪ দিন স্থায়ী হয়।
২. ফোস্কাগুলো ক্রমে ফুলে উঠে এবং হলুদ পদার্থ নিঃসৃত হতে থাকে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
৩. ঘাড় এবং পিঠ শক্ত হয়ে উঠে কিংবা তীব্র কাশি শুরু হয়।
উপরের উপসর্গগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি পরিলক্ষিত হলে আর দেরি না করে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

পক্স বা জলবসন্ত ঠেকাতে প্রতিষেধক
বর্তমানে চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নয়নের ফলে জলবসন্তেরও প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়েছে। আপনার শিশুর বয়স ১৩ মাসের বেশি হলে আর দেরি না করে এখনি চিকেন পক্সের ভ্যাকসিন দিয়ে ফেলুন।
১৩মাসের বড় যে কারোর জন্যই ৪ থেকে ৮ সপ্তাহের ব্যবধানে ২ বার এই ইনজেকশন দিতে হয় । বাংলাদেশে বর্তমানে সব হাসপাতালেই চিকেন পক্সের ভ্যাকসিন পাওয়া যায় এবং অবশ্যই চিকেন পক্স আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শ থেকে আপনার শিশুকে দূরে রাখুন।

এই পাতাটি ২৮৯বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626