রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

ঠান্ডা-জ্বরেও সুরক্ষিত থাকতে করনীয়

২৫-১০-২০২১

ঠান্ডা-জ্বরেও সুরক্ষিত থাকতে করনীয়

বৈশ্বিক করোনা মহামারির বিরূপ প্রভাব খানিকটা কাটিয়ে উঠে আমরা যখন কিছুটা নিশ্চিন্ত সময় পার করছি, তখনই চারদিকে বাড়ছে জ্বর-কাশি-ঠান্ডায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সব বয়সী মানুষই ভুগছেন, তবে শিশু ও বয়স্করা ভুগছেন বেশি।সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস সংক্রমণের ফলে হয়ে থাকে এমন সমস্যা। ঋতু পরিবর্তনের এ সময়টায় প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় বলে একে বলা হয় সিজনাল ফ্লু। জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথাব্যথা, শরীরব্যথা প্রভৃতিই এর লক্ষণ। বিগত বছরের তুলনায় এবার ফ্লু ও এ–সংক্রান্ত নিউমোনিয়া ও অন্যান্য জটিলতার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

সতর্ক থাকুন

সিজনাল ফ্লুর লক্ষণগুলো অনেকাংশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণের মতোই। খেয়াল রাখতে হবে, করোনা সংক্রমণের হার কমে গেলেও তা একেবারে নির্মূল হয়ে যায়নি। প্রতিদিন করোনার কারণে কিছু মৃত্যুসংবাদ এখনো পাওয়া যাচ্ছে। তাই এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক থাকা ভালো। করোনা সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা নির্ণয় করার জন্য করোনার র্যাোপিড অ্যান্টিজেন ও আরটি–পিসিআর পরীক্ষা তো আছেই, তেমনি অন্যান্য কিছু পরীক্ষারও প্রয়োজন হতে পারে। তা ছাড়া ভুলে গেলে চলবে না, মৌসুম এখন ডেঙ্গু জ্বরের। মাথাব্যথা, শরীরব্যথা ও উচ্চমাত্রার জ্বর ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ। তাই সাধারণ ঠান্ডা–জ্বরের উপসর্গ দেখা দিলেও প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

আতঙ্ক নয়, সচেতনতা

সিজনাল ফ্লু নিতান্তই সাধারণ সমস্যা। এ নিয়ে বিচলিত বা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বাড়িতে চিকিৎসা এবং বিশ্রামেই সাধারণত এমন সমস্যা সেরে যায়। ফ্লুর ব্যবস্থাপনা হওয়া উচিত উপসর্গভিত্তিক। প্রাথমিকভাবে বাড়িতেই খুব সহজ উপায়ে এসব উপসর্গের উপশম সম্ভব। ফ্লুর লক্ষণ দেখা দিলে পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে প্রচুর পরিমাণে। ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ খাবার (টক ফল) গ্রহণ করতে হবে। পানি ও ভিটামিন সি দুটিই একসঙ্গে গ্রহণ করতে বারবার লেবু-পানি পান করা যায়। কাশি হলে উষ্ণ পানীয় গ্রহণে আরাম মেলে, যেমন লেবু আদা চা, গ্রিন টি বা গরম স্যুপ। উত্তাপে ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায় বলে উষ্ণ পানীয় থেকে ভিটামিন সি পাওয়া মুশকিল। এ ছাড়া হালকা উষ্ণ পানি দিয়ে গড়গড়া করা যেতে পারে। জ্বর হলে গোসল করতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। বিশ্রাম নিন।

প্রয়োজনে ওষুধ সেবন

কারও কারও ক্ষেত্রে ওষুধ সেবন করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু নিজ থেকে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা যাবে না। সাধারণত এটি ভাইরাস জ্বর, তাই অ্যান্টিবায়োটিক দরকার নেই। তবে ফ্লু থেকে কারও কারও নিউমোনিয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক লাগবে। জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরব্যথার জন্য প্যারাসিটামল সেবন করা যেতে পারে। সর্দির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন–জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। তবে সব ধরনের অ্যান্টিহিস্টামিন সবার জন্য উপযোগী না-ও হতে পারে। যেমন কোনো কোনো অ্যাজমা রোগী নির্দিষ্ট কিছু অ্যান্টিহিস্টামিন গ্রহণ করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হন। তাই শ্বাসতন্ত্রের কোনো সমস্যা থেকে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এরপর এ ধরনের চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

পৃথক থাকা উচিত

সিজনাল ফ্লু যেহেতু একটি ভাইরাসবাহিত রোগ, তাই এর লক্ষণ দেখা দিলে বাড়ির বাইরে না যাওয়াই উচিত। বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে রোগীর একটু আলাদাভাবে অবস্থান করাই ভালো। অর্থাৎ তাঁদের থেকেও যতটা সম্ভব পৃথক থাকতে হবে। তাঁদের সংস্পর্শে যেতে হলে মাস্ক পরিধান করা উচিত। তা ছাড়া একই গ্লাস, থালাবাটি, চামচ প্রভৃতি ব্যবহার না করাই ভালো। করোনার মতো এই ভাইরাসকেও মাস্ক, হাত ধোয়া ও হাঁচি–কাশির আদবকেতা মেনে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির ক্ষেত্রে সাধারণ ফ্লুর উপসর্গের পাশাপাশি কখনো কখনো শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। তবে যেকোনো বয়সী রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে কিংবা ২ থেকে ৫ দিনের মধ্যে জ্বর উপশম না হলে বা জ্বর বাড়তেই থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যক। কারও কারও হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হতে পারে। এ ছাড়া আগে থেকেই ফুসফুসের কোনো রোগ থাকলে, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকলে কিংবা রোগী বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি হলে শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক তাঁকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন। এমন রোগীর শ্বাসকষ্ট হলে, অতিরিক্ত কাশি হলে, সাধারণ লক্ষণগুলোই খুব বেশি ভোগালে, খাওয়াদাওয়া করতে না পারলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে।

প্রতিরোধে সচেতনতা

হাঁচি–কাশির আদবকেতা বজায় রাখতেই হবে সবাইকে। টিস্যু বা রুমাল দিয়ে ঢেকে নিতে হবে হাঁচি-কাশি। তারপর ব্যবহৃত টিস্যু পেপার ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। হাতের কাছে এগুলো না থাকলে কনুই দিয়ে হাঁচি-কাশি ঢেকে নিন। সর্দি হলে তা টিস্যুতে মুড়িয়ে যথাস্থানে ফেলতে হবে এবং এরপর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করতেই হবে।

ফ্লু এবং নিউমোনিয়ার টিকা

শীত আসন্ন। তার আগেই এবার বেড়ে গেছে ঠান্ডা–জ্বরের প্রকোপ। শীতে ফ্লু এবং নিউমোনিয়ার প্রাদুর্ভাব আরও বেশি দেখা দিতে পারে। এ দুটি রোগ ঠেকাতে টিকা আছে। ফ্লু এবং নিউমোনিয়ার ঝুঁকিতে যাঁরা রয়েছেন, শীত মৌসুমের আগে তাঁদের ফ্লু এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিয়ে নেওয়া উচিত এখনই।

কারা নেবেন:

বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা যাঁদের কম কিংবা যাঁরা ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগে ভুগছেন (যেমন অ্যাজমা, সিওপিডি প্রভৃতি), তাঁদের ফ্লু এবং নিউমোনিয়ায় ভোগার ঝুঁকি বেশি থাকে। এ ছাড়া যাঁরা আগে করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন এবং ফুসফুসের ওপর করোনাভাইরাসের ক্ষতিকর প্রভাব রয়ে গেছে, তাঁরাও এবার যোগ হয়েছেন এ ঝুঁকিপূর্ণ দলে।

কীভাবে নেবেন

ফ্লুর টিকা নিতে হয় প্রতিবছরই। আর নিউমোনিয়ার টিকা নিতে হয় পাঁচ বছর পরপর। নিকটস্থ টিকাকেন্দ্রে বা হাসপাতালেই দিতে পারবেন। দুটি টিকা একই দিনে নেওয়া যাবে। দরকার হলে তার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।

এই পাতাটি ১৬৫বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626