রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

বাচ্চা খেতে চায় না, জেনে নিন সমাধান

০৭-০৯-২০২০

বাচ্চা খেতে চায় না, জেনে নিন সমাধান

মায়েদের খুব কমন একটা অভিযোগ হলো তার বাচ্চা খেতে চায় না, বিশেষত সবজি তো একদমই না। এঞ্জেলা লেমন্ড, যিনি প্ল্যানো, টেক্সাসের একজন ডায়েটিশিয়ান, বলেছেন, “ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত বেছে খাওয়া কোন দোষের কিছু নয়। কারন তারা এই প্রথম কোন খাবারের স্বাদ ও গন্ধের সাথে পরিচিত হচ্ছে।“

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ২০% বাবা মায়ের অভিযোগ তাদের ২-৫ বছর বয়সী বাচ্চা বেছে বেছে খায়। বয়সের সাথে সাথে হয়তো এই সমস্যা চলে যাবে, কিন্তু ততদিন বাবা মায়েদের করনীয় কি? প্রথম পদক্ষেপ হলো এটা বোঝার চেষ্টা করা যে বাচ্চা কেন খায় না।

এটা কি সত্যিই খেতে খারাপ?
লেমন্ড বলেন, “বাচ্চারা সাধারনত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে। এসময় তাদের শরীর দ্রুত বাড়ার কারনে প্রাকৃতিক ভাবেই শরীরে অধিক ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবারে চাহিদা থাকে।“এছাড়াও প্রতি চারজনের মধ্যে একজন মানুষ জিনগত ভাবেই তিতা খাবারের প্রতি সংবেদনশীল হয়ে থাকে। আপনার বাচ্চার বেছে খাওয়ার এটাও একটা কারন হতে পারে।
কিভাবে সামলাবেনঃ তাই বলে কি এসব খাবার মেন্যু থেকে বাদ দিয়ে দিবেন? লেমন্ড পরামর্শ দিয়েছেন যে, এ ক্ষেত্রে খাবার আপনি ভিন্ন রুপে পরিবেশন করতে পারেন। যেমন- আপনার বাচ্চা যদি ব্রকলি খেতে না চায় তাহলে সেটা দিয়ে স্যুপ বানিয়ে দিতে পারেন। পরীক্ষায় দেখা গেছে, বাচ্চাদের কোন খাবার সরাসরি খাওয়ানোর আগে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ বার সেই খাবার ভিন্ন ভিন্ন রুপে তাকে খাওয়াতে হবে। এছাড়া আপনি তার প্রিয় কোন খাবারের সাথে নতুন খাবার মিশিয়েও খাওয়াতে পারেন। যেমন- আপনার বাচ্চা যদি নুডুলস খেতে পছন্দ করে তাহলে নুডুলসের সাথে সবজি মিশিয়ে রান্না করতে পারেন। সাথে তার পছন্দের সস দিতে পারেন। এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, বাচ্চারা সাধারন সবজি খাওয়ার চেয়েতাদের প্রিয় সস দিয়েতিনগুন বেশি সবজি খায়।

বাচ্চা কি আসলেই ক্ষুধার্ত?
২ বছর বয়সের সময় বাচ্চাদের স্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধির হার কমে যায়। সান ডিয়েগোর একজন ডায়েটিশিয়ান ম্যারিয়ান জেকবসনের মতে, “হয়তো আপনার বাচ্চার এ সময়ে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুধা কম লাগছে।“ যতক্ষণ পর্যন্ত ডাক্তারের মতে আপনার বাচ্চার উচ্চতা ও ওজন ঠিক আছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাচ্চার বেছে খাওয়া নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। বাচ্চারা যদি বার বারমুখরোচক নাস্তা ও কোমল পানীয় জাতীয় খাবার বার বার খায় তাহলে মূল খাবার খাওয়ার জন্য তাদের ক্ষুধা না থাকাই স্বাভাবিক। জেকবসন বলেন, “যদি বাচ্চারা রাতের খাবারের ১ ঘণ্টা আগে চিপ্স বা জ্যুস খায় তাহলে তারা স্বাভাবিক ভাবেই রাতের খাবার খেতে চাইবে না।“

কিভাবে সামলাবেনঃ তিন বেলার মূল খাবার ঠিক রেখে শুধু মাত্র সকালে ও বিকেলে মুখরোচক নাস্তা খাওয়ার অভ্যাস করান। জেকবসন বলেন, “এতে বাচ্চারা একদিকে যেমন পর্যাপ্ত পরিমানে খায়, তেমনি অন্যদিকে খাবারের প্রতি তাদের আগ্রহও বৃদ্ধি পায়।“

আপনার বাচ্চা তার মতামত জাহির করতে চাইবে
বেশীরভাগ বাবামার মতে তাদের বাচ্চার প্রিয় শব্দ হলো, “না!”। খাবারের সময় তার প্লেট ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সে নিজের মতামত প্রকাশ করতে চায়। জেকবসন বলেন, “এটা তার বেড়ে ওঠার একটি স্বাভাবিক অংশ।“
কিভাবে সামলাবেনঃ খাবারের ব্যাপারে জোরাজোরি করবেন না। আপনি হয়তো আপনার বাচ্চাকে মটরশুঁটি খাওয়ার জন্য জোর করলেন, এতে সে হয়তো আর কোনদিন মটরশুঁটি খাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ বোধ করবে না। অনেকেই আবার বাচ্চাদের চাপ দিয়ে বা তর্ক করে বলেন, “যদি তুমি তোমার খাবার শেষ করো, শুধুমাত্র তাহলেই তোমার প্রিয় চকলেট বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পারবে।“

এসব না করে বরং বাচ্চাকে তার সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করুন। লেমন্ড বলেন, “আপনি আপনার বাচ্চাকে খাবারের উপকারিতা গুলো বুঝানোর চেষ্টা করতে পারেন। যেমন- আমি আমার ছেলেকে বুঝিয়েছি যে ব্রকলি তাকে ভালো একজন ফুটবলার হতে কিভাবে সাহায্য করবে।“

আপনার বাচ্চার হয়তো আসলেই স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি আছে
এটা যদিও সচারচর দেখা যায় না, তবে হতে পারে কোন খাবারে আপনার বাচ্চার সত্যিই কোন স্বাস্থ্যগত সমস্যা আছে। জেকবসন বলেন, “যদি কোন খাবার দেখলে আপনার বাচ্চা খুব বেশি পরিমানে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে বা বার বার খেতে মানা করে তাহলে হয়তো সেটা সত্যিই ভাবার বিষয়। হয়তো সেই খাবার তার অ্যালার্জি, তাই তার মস্তিষ্ক তাকে এই খাবারের ব্যাপারে বার বার সাবধান করে দিচ্ছে। একে বলে Sensory Processing Disorder.”

কিভাবে সামলাবেনঃ আপনার বাচ্চার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। যদি আপনার বাচ্চা নির্দিষ্ট কোন ধরনের খাবার খেতে মানা করে বা খাওয়ার পরে বলে যে এতে তার পেট ব্যাথা করছে বা অসুবিধা হচ্ছে তাহলে সেটা অবশ্যই ডাক্তারকে জানাতে ভুলবেন না।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
খুব সাধারন কিছু খাদ্যাভ্যাস আপনার বাচ্চার বেছে খাওয়ার সমস্যা দূর করার পাশাপাশি আরও অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। যেমন- খাবারের মধ্যে একটু ভিন্নতা আনলে খাবার টেবিল আর যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত নাও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি পাস্তা রান্না করেন তাহলে নুডুলস, সস, মাংস, সালাদ মিশিয়ে দিন। জেকবসন বলেন, “আপনার বাচ্চা হয়তো এর থেকে শুধুমাত্র নুডুলস ও সস খাবে, কিন্তু সেটা কোন সমস্যা নয়।“

খেয়াল রাখুন যেন খাবার থেকে মনোযোগ সরে না যায়
বাচ্চারা খাওয়ার চেয়ে খেলতে বেশি পছন্দ করে। তাই, খাওয়ার সময় টিভি বন্ধ রাখুন ও ফোন দূরে রাখুন, যাতে তাদের মনোযোগ সেদিকে না যায়।

ঝটপট রান্না করার অভ্যাস ত্যাগ করুন
আপনি যেটা রান্না করেছেন সেটা হয়তো আপনার বাচ্চা খেতে চাইছে না। তাই, আপনি ভাবলেন তাকে ঝটপট তার প্রিয় কোন খাবার রান্না করে দিবেন যাতে সে ক্ষুধার্ত না থাকে। কিন্তু এতে করে পছন্দ মতো খাবার খাওয়ার জন্য জেদ করা তার অভ্যাসে পরিণত হবে। তার বদলে তাকে বিকল্প কোন খাবারের অপশন বাছাই করার সুযোগ না দিয়ে খাবার পাত্র খালি করে ফেলুন। জেকবসন বলেন, “যদি সে ক্ষুধার্ত হয়, কোন ফল বা হালকা স্বাস্থ্যকর নাস্তা খেতে দিন যাতে পরবর্তী মূল খাবারের সময় পর্যন্ত সে ক্ষুধার্ত না থাকে।“

বাচ্চাদের রান্নাঘরে আসতে দিন
রান্না করার সময়ে আপনাকে সাহায্য করার জন্য বাচ্চাদের রান্না ঘরে আসতে দিন। এতে করে তারা যে খাবার তৈরিতে সরাসরি সাহায্য করেছে, সেটা খেতে উৎসাহিতবোধ করবে। বাজার করার সময় তাদের ফল ও শাকসবজি বাছাই করতে দিন। বাসায় বাচ্চারা সবজি ধুতে, বাটি আনতে বা অন্য ছোট খাটো কাজে সাহায্য করতে পারে।

একজন আদর্শ হন
বাচ্চারা সবসময় তার বাবা মাকে অনুসরন করে, এটাকে তাদের খাদ্যাভ্যাসের সাথেও যুক্ত করুন। জেকবসনের মতে, “নতুন ধরনের খাবার খেতে আপনারও ভালো লাগবে।“ টেস্ট করার জন্য বেশ কয়েকটি খাবার নির্বাচন করুন, এবং আপনার পরিবারের সকল সদস্যদের বলুন স্বাদ অনুযায়ী এসব খাবারকে ১ থেকে ১০ এর মধ্যে কোন নাম্বার দিতে।

এই পাতাটি ৩৬১বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626