রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

বয়স যখন ৫০ এর কোঠায়ঃ জীবনযাত্রায় কি পরিবর্তন আনবেন

২৪-০৮-২০২০

বয়স যখন ৫০ এর কোঠায়ঃ জীবনযাত্রায় কি পরিবর্তন আনবেন

মস্তিষ্ক আপনার বয়স যখন ৫০, তখন অবশ্যই ২৫ বছর বয়সীর তুলনায় আপনাকে বেশি মাথা খাটাতে হবে। যদিও ৫৫ বছরের দিকে প্রাকৃতিক ভাবেই মস্তিষ্ক কিছুটা কম কাজ করবে, কিন্তু সেই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, যতটা না বয়সের কারনে মস্তিষ্ক দুর্বল হয় তার চেয়ে বেশি দুর্বল হয় যদি আমরা ধরে নেই যে আমাদের মস্তিষ্ক আর আগের মতো কাজ করবে না। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বহাল রাখতে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। খাবারের তালিকায় শাকসবজি, ফলমূল, দানাদার খাবার, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যেমন অলিভ ও ক্যানলা তেল ইত্যাদি।

মানসিক সুস্থ্যতা
প্রায় ৯৫%, ৫০ বছর বয়সী মানুষ বলে থাকেন যে তারা তাদের জীবনে “সন্তুষ্ট”বা খুব “সন্তুষ্ট”। কিন্তু এ বয়সী মহিলাদের ক্ষেত্রে মেনোপজের ফলে হওয়া হরমোনাল তারতম্যের কারনে মুড সুইং হয়। এই সমস্যা মোকাবেলার সহজ উপায় হলো, কম বসুন, নড়াচড়া বেশি করুন। আপনার মানসিক স্বাস্থ্য খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে যদি আপনি দিনে ৭ ঘণ্টার বেশি সময় বসে থাকেন বা কোন ব্যায়াম না করেন।

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা
বয়সের সাথে সাথে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াজনিত ও অন্যান্য অসুখ হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। কারন বয়সের সাথে সাথে আমাদের শরীরের আগের চেয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই নিয়মিত এইসব রোগের ভ্যাক্সিন নিন ও ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

শ্রবণ ক্ষমতা
৫০ বছর বয়সী প্রায় ৪০% মানুষের শ্রবণ ক্ষমতা কমে যায়। এক্ষেত্রে জিনগত সমস্যার পাশাপাশি কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিক ইত্যাদি বিষয় সময়ের সাথে সাথে আপনার শ্রবণ ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। আপনি যদি কোন সমস্যা অনুভব করেন, ডাক্তারের সাথে কথা বলে শ্রবণ সমস্যার পরীক্ষা করাতে পারেন। যাদের শুনতে সমস্যা হয় তারা প্রিয়জনদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান ও বিষণ্ণতায় ভুগেন।

হাড়
যখন আপনি কম বয়সী ছিলেন আপনার শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্ষয় হয়ে যাওয়া জীর্ণ হাড়ের ক্ষয় পূরণ করে দিত। কিন্তু বয়স যখন ৫০ এর কোঠায়, আপনার শরীরে সুস্থ হাড়ের তুলনায় জীর্ণ হাড়ের পরিমান বেশি থাকবে। অর্থাৎ, প্রাকৃতিক ভাবেই আপনার হাড় দুর্বল হতে থাকবে। তাই, হাড় মজবুত রাখতে এ সময় আপনাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এ সময় ভারবহন ও প্রতিরোধ মূলক অনুশীলন যেমন- ভ্রমন করা, ভার উত্তোলন করা ইত্যাদি আপনার হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করবে।

মাসল
৫০ এর পর আপনার মাসল দ্রুত ক্ষয় হতে থাকে। আপনার শারীরিক শক্তিও কমতে থাকে। এই সমস্যা এড়াতে চাইলে ভার উত্তোলন এবং শক্তিবর্ধক অনুশীলন যেমন- লাংস ও স্কোয়াট, সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার করতে হবে। এতে করে শুধু যে আপনার ক্ষয় হওয়া মাসল পুনর্গঠিত হবে তাই নয়, আপনার শারীরিক ভারসাম্য বজায় থাকবে যা বয়সের সাথে সাথে আরও সহজ হবে।

জয়েন্ট
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনার শরীরে জয়েন্টের টিস্যু ও কারটিলেজ গুলো পাতলা হতে শুরু করে এবং এর প্রভাব আপনি ৫০ এর কোঠায় গেলেই ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন (পুরুষদের ক্ষেত্রে আরও তাড়াতাড়ি)। জয়েন্টের ব্যথা ও আরথ্রাইটিসের সমস্যা কমাতে চাইলে, আপনার চলাফেরায় পরিবর্তন আনুন। যখন ভাঁজ হয়ে বসবেন, তখন জয়েন্টের ওপর চাপ দিয়ে বসুন। ওজন ঠিক রাখুন, কারন প্রতি পাউন্ড অতিরিক্ত ওজন আপনার জয়েন্টের ওপর প্রভাব ফেলবে। এছাড়া প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন। কারন যখন আপনার পিপাসা লাগে, আপনার শরীর জয়েন্ট টিস্যু থেকে তরল পদার্থ টেনে নেয়।

হার্ট
যখনি আপনি ৫০ এর ঘরে পা রাখবেন, আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যাবে। নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে আপনার হার্ট ও রক্তনালী সুস্থ থাকবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট অনুশীলন করার চেষ্টা করুন, হতে পারে সেটা সাধারন হাঁটাহাঁটি। আপনার ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে চেষ্টা করুন। যদি ধূমপান বাদ না দিয়ে থাকেন, এটাই তার জন্য উপযুক্ত সময়। ধূমপানের অভ্যাস হার্টের সমস্যার মূল কারন।

চুল
বয়স ৫০ হওয়ার সাথে সাথে আপনার চুল পাতলা হতে শুরু করে ও ঝরে পড়ে, বিশেষত এটা পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। আপনার চুল ধীরে ধীরে পেকে যেতে শুরু করে। আপনি যদি নিজেকে “বৃদ্ধ” দেখতে না চান, তাহলে চুলে রং করাতে পারেন। আপনি এ বিষয়ে আপনার ডাক্তারের সাথেও কথা বলতে পারেন।

ত্বক
সূর্যের কারনে অল্প বয়সে আপনার ত্বকে যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেগুলো এ সময়ে তার ফলাফল দেখাতে শুরু করবে। আপনার ত্বকে বিভিন্ন বয়সজনিত দাগ দেখা দিতে পারে, যা স্কিন ক্যান্সারের লক্ষন হতে পারে। যদি আপনি বয়স কম থাকতে ত্বকের যত্নের ব্যাপারে সচেতন না থাকেন, তাহলে এখন সচেতন হন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ SPF এর সানস্ক্রিন লাগান ও প্রতি বছর কমপক্ষে ১ বার স্কিন ক্যান্সার পরীক্ষা করান। আপনার ত্বক ধীরে ধীরে শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যাবে, তাই ভালো ধরনের ময়েচারাইজার (লোশান্ না) লাগান।

দৃষ্টিশক্তি
ফোনের লেখা পড়ার জন্য যদি আপনাকে চোখ কুঁচকে তাকাতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে বয়সের কারনে আপনার চোখের লেন্সের নমনীয়তা কমে গেছে। তাই, তারা দূরবর্তী জিনিস থেকে সরে কাছের জিনিস দেখার জন্য আগের মতো খুব দ্রুত ফোকাস করতে পারে না। এক্ষেত্রে আপনি পড়ার চশমা ব্যবহার করতে পারেন বা চোখের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের সমস্যাও বাড়বে, তাই নিয়মিত চোখের ব্যায়াম করুন।

মেনোপজ
মহিলাদের আনুমানিক ৫১ বছর বয়সে মেনোপজ হওয়া ভালো লক্ষন। যেহেতু এ সময়ে খুব বেশি হরমোনাল তারতম্য হয় তাই এর ফলশ্রুতিতে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, মুড সুইং ও হট ফ্লাস এর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসময় জীবন যাত্রায় অনেক পরিবর্তন আনতে হবে, পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম দরকার। নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা
মধ্য বয়সে বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকির উপসর্গ দেখা দেয়, তাই সময় থাকতেই পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে এগুলো সনাক্ত করা ভালো। যেমন- কোলন ক্যান্সার আছে কিনা দেখার জন্য কোলনস্কোপি করা। মহিলাদের প্রতি বছর ম্যামগ্রাম করা ও ৩ বছর পর পর Pap smear করা এবং পুরুষদের প্রস্টেট ও টেস্টিকল ক্যান্সার আছে কিনা সেটা ৩ বছর পর পর পরীক্ষা করা দরকার। আপনার কোন বংশগত কোন অসুখ থাকলে সেটা আপনার ডাক্তারকে জানান। সেক্ষেত্রে তিনি হয়তো আরও কোন পরীক্ষা করতে চাইবে।

এই পাতাটি ৪৫২বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626