রাজডক - Rajdoc
Banolata-2023-03-09.gif
Banolata-2024-03-09.gif

ডাঃ এর সিরিয়াল দিন

ডায়াবেটিস হলে আমরা ইনসুলিন কখন ও কেন  নিব ?

২৪-০৮-২০২০

ডায়াবেটিস হলে আমরা ইনসুলিন কখন ও কেন নিব ?

ডায়াবেটিস খুব সাধারন একটি অসুখ। ডায়াবেটিস হলে শরীরে চিনি বা শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। আমাদের দেহে চিনির স্তর অগ্নাশয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। যার মুল উদ্দেশ্য ইন্সুলিন নিঃসরণ করা। ইন্সুলিন হল হরমোন যা গ্লুকোজ কে ভেঙ্গে আমাদের কাজের জন্য শক্তি উৎপন্ন করে। তবে অতিরিক্ত গ্লুকোজ সাস্থের গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করে। যখন অগ্নাশয়ে ইন্সুলিন কম উৎপন্ন হয় বা কোন ইন্সুলিন উৎপন্ন হয় না এবং যখন ইন্সুলিন শরীরে কাজ করতে অক্ষম হয় তখন গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা খুব বেশি হয় রক্তপ্রবাহে। এ অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলা হয়।

ডায়াবেটিস প্রধানত দুই প্রকারঃ

১। টাইপ ১ ডায়াবেটিস
২। টাইপ ২ ডায়াবেটিস

টাইপ ১ ডায়াবেটিসঃ টাইপ ১ ডায়াবেটিস এ আগ্নাশয় থেকে ইন্সুলিন খুব কম উৎপন্ন হয় বা কোন ইন্সুলিন উৎপন্ন হয় না। ইন্সুলিনের অভাবে দেহে শর্করা ভাঙ্গতে অক্ষম হয় এবং রক্তপ্রবাহে থেকে যায় এবং সরবচ্চ স্তরে উঠে আমাদের জীবনকে বিপন্ন করে তোলে । এটি শিশুদের মধ্যে লক্ষ করা হয় কখনো কখনো জন্মের পরেও। টাইপ ১ ডায়াবেটিস কে অটোইমিউন ডিজিজ হিসাবেও শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।

টাইপ ২ ডায়াবেটিসঃ টাইপ ২ ডায়াবেটিস এ অগ্নাশয় থেকে নিশ্রত ইন্সুলিন হরমন কাজ করতে অক্ষম হয় ফলে রক্ত প্রবাহে শর্করা বা গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে যায় । এটি মুলত অসাস্থকর খাদ্য অভ্যাস এবং ত্রুটি পূর্ণ জীবন যাত্রার কারনে ঘটে।

কেন ইনসুলিন নিতে হবে?
ডায়াবেটিস হলেই যে ইন্সুলিন নিতে হবে তা নয়। ইনসুলিন গ্রহণের নির্দিষ্ট কারণ ও নির্দেশনা আছে। টাইপ–২ ডায়াবেটিস বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জীবনাচরণ পরিবর্তন ও নানা ধরনের ওষুধেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিছু বিশেষ রোগীর বেলায় ইনসুলিন দরকার হয়। এখন জেনে নিন কখন চিকিৎসক ইনসুলিন গ্রহণ করতে বলতে পারেন।

কখন ইনসুলিন নিতে হবে?
টাইপ–১ ডায়াবেটিসে ওষুধ কাজ করে না। এদের ইনসুলিন–নির্ভর হয়ে বেঁচে থাকতে হয়।

বিভিন্ন গুরুতর রোগে যেমন: হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা মারাত্মক কোনো সংক্রমণে (যেমন: যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ফোড়া, গ্যাংগ্রিন ইত্যাদি) দ্রুত সেরে উঠতে ইনসুলিনই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ।

কিডনি ও যকৃতের জটিলতা থাকলে ইনসুলিন ব্যবহার করতে হবে। জন্ডিস হলে সাময়িকভাবে ওষুধ বন্ধ রেখে ইনসুলিন দিতে হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও শিশুকে স্তন্যপান করানোর সময় সবচেয়ে নিরাপদ হচ্ছে ইনসুলিন। তাই গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে এবং আগে থেকে জানা ডায়াবেটিসের রোগী যদি মা হতে চান তবে সব ওষুধ বন্ধ করে দিয়ে ইনসুলিন দিতে হবে।

ডায়াবেটিসের রোগীদের যেকোনো অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেবল ঘা শুকানোকে ত্বরান্বিত করাই নয়, নানা ধরনের জটিলতা এড়াতে এ পরিস্থিতিতে সাময়িক বা দীর্ঘমেয়াদি ইনসুলিন লাগতে পারে।

উচ্চ মাত্রায় কয়েকটি বা তিন ধরনের ওষুধ প্রায় সর্বোচ্চ মাত্রায় ব্যবহার করার পর কারও ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে একে ওরাল হাইপোগ্লাইসেমিক এজেন্ট ফেইলিওর বলে। এটা প্রমাণ করে তার ওষুধে আর কাজ হবে না, কেননা তার অগ্ন্যাশয়ে যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপাদন হচ্ছে না। এই ক্ষেত্রে তাকে ইনসুলিন–নির্ভর হয়ে যেতে হবে।

অনেকের প্রথমেই রক্তে শর্করার মাত্রা অনেক বেশি ধরা পড়ে। রক্তে শর্করা ১৬.৭ মিলিমোল বা ৩০০ গ্রাম/ডেসিলিটারের বেশি বা গড় শর্করা এইচবিএওয়ান সি ১০ শতাংশের বেশি হলে ইনসুলিন দিয়ে আগে কমিয়ে নিতে হবে। এ অবস্থায় ওষুধ কার্যকর নয়। বরং নানা জটিলতা ডেকে আনবে।

রক্তে শর্করা আকস্মিকভাবে অনেক বেড়ে গেলে ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস ও হাইপারঅসমলার কমা নামের জীবননাশী জটিলতা হতে পারে। এ রকম আশঙ্কা বেড়ে গেলে হাসপাতালে ভর্তি করে স্যালাইনের মাধ্যমে ইনসুলিন দিতে হয়।


ডা: রেবেকা সুলতানা
এমবিবিএস, এমডি(প্যাথলজি), সিসিডি(বারডেম)

এই পাতাটি ৪৪৫বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য প্রবন্ধ



যোগাযোগ
প্যারামেডিকেল রোড
লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
Email: info@rajdoc.com
Phone: +8801753226626