জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অল্প বয়সে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। শিশুর গর্ভাবস্থায় মায়ের ও নবজাতকের পুষ্টির অভাব এ রোগ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। সমাজের ভবিষ্যৎ যারা, তারাই যদি অল্প বয়সে অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাহলে দেশ বিপদে পড়বে। কিছুদিন আগেও অল্প বয়সের ডায়াবেটিস, অর্থাৎ টাইপ-১ বা ইনসুলিননির্ভর ডায়াবেটিস বলে প্রায় সর্বক্ষেত্রে ধরা হতো। কিন্তু ইদানীং স্থূলকায় শিশুদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। অল্প বয়সীদের ডায়াবেটিসের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের হার ১৯৯২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী শতকরা ২-৪ ভাগ থেকে এখন ৮-৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অল্প বয়সীদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরিবারে কারও না কারও ডায়াবেটিস রোগ থাকে। এদের মধ্যে শতকরা ৪৫ থেকে ৮০ ভাগের বাবা-মা যে কোনো একজনের আর শতকরা ৭৮ থেকে ১০০ ভাগ ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের বংশধরদের মধ্যে ডায়াবেটিসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। বাবা-মা দুজনের যদি ডায়াবেটিস থাকে, তবে সন্তানের ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ। মায়ের যদি ডায়াবেটিস থাকে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়, তবে সন্তানের ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বেশি হয়। অল্প বয়সে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের কারণ হলো ভাইরাসজনিত অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ এবং ফলস্বরূপ ইনসুলিনের অভাব। পুষ্টির অভাবে গর্ভাবস্থা ও জন্মের পরে ইনসুলিন নিঃসরণকারী বিটাসেলের অপরিমিত বৃদ্ধি অন্যতম কারণ। অল্প বয়সে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে স্থূলতার হার, যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের চেয়ে অনেক বেশি। বর্তমান সময় ছোটরা পরিশ্রম ও খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত। খাওয়া-দাওয়া প্রধানত এখন চটজলদি ফাস্টফুড বা ফ্রাইড চিপস চকলেট। খেলাধুলার বদলে টিভির কার্টুন দেখেই সময় কাটায় তারা। বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে মোটা হওয়ার প্রবণতা তাই অনেক বেড়ে গেছে। দ্রুত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা ভালো। শুরুতেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন, ভালো থাকুন।